মনের কথা
“বাংলা প্রেমের কবিতা: প্রেমের গভীরতা ও অনুভূতির বাস্তবতা”

“আলিঙ্গনের প্রার্থনায়”
আন্না রহমান
(বাংলা প্রেমের কবিতা)
হে ভাগ্য!
কোথা সে মানবপ্রাণ,
যে প্রভাতের প্রথম রবি উদয়ের লগ্নে
আমার অঙ্গে দিবে আলিঙ্গনের পূণ্যস্নান?
যে কর্মভারে যাত্রা করিতে গিয়া,
আমার কপোলে রাখিবে চুম্বনের অমিয় বর্ষা,
মুছাইয়া দিবে নিঃশব্দে সব অব্যক্ত ক্লেশ।
যে ফিরিয়া আসিয়া দিনের অন্তে,
শিশুর ন্যায় সরল, নিষ্পাপ মন লইয়া
আমার কোলেতে রাখিবে ক্লান্ত ললাট,
ভুলিবে সংসার যন্ত্রণার তীব্র গাথা—
সে কি তবে স্বর্গ হতে প্রেরিত প্রাণ?
যে আমার উন্মাদ উচ্ছ্বাস, খামখেয়ালি মেজাজ,
আদরে রূপ দিবে, মধুময় করিবে তীব্রতা,
আর যদি কখনো অশ্রু ছলকে পড়ে নয়নপাতে,
সে ঝাঁপায়ে আসিবে বক্ষে লইতে, বলিবে—
“হে প্রিয়তমা!
কেঁদো না, আমি তো আছি!”
সে মানব, যে আমাকে হৃদয়ের গভীরে
জড়াইয়া রাখিবে, দিবে নিদ্রার আশ্রয়,
তার ভালোবাসা হইবে আশ্রয়দাত্রী গৃহ,
আর তাহার বক্ষে হারাইয়া যাইবে আমার সকল ভয়।
বাংলা প্রেমের কবিতা যেখানে ফুটে উঠেছে নিঃস্বার্থ ভালোবাসা
ভূমিকা: ভালোবাসার প্রতীক্ষায় এক আত্মার আর্তনাদ
এই বাংলা প্রেমের কবিতা’টি কোনো সাধারণ প্রার্থনা নয়, বরং এক মানবহৃদয়ের অন্তর্নিহিত আর্তনাদ।প্রতিটি শব্দে মিশে আছে নিঃসঙ্গতার বেদনা,ভালোবাসার জন্য তীব্র আকুলতা এবং সেইসঙ্গে এক অদ্ভুত প্রত্যাশা—হয়তো কোনো একদিন এমন কেউ আসবে,যে এই একাকীত্বকে ভালোবাসার আলিঙ্গনে রাঙিয়ে দেবে।”
“এটি শুধু কবিতাই নয়, এটি এক যন্ত্রণার্ত আত্মার ডায়েরি,যেখানে অঙ্কিত রয়েছে অপূর্ণ প্রেমের কাহিনি।”
কবিতার গাঠনিক বিশ্লেষণ
১. স্তবকভিত্তিক মূলবক্তব্য
-প্রথম স্তবক: “কোথা সে মানবপ্রাণ…” → অন্বেষণের শুরু
– দ্বিতীয় স্তবক: “যে কর্মভারে যাত্রা করিতে গিয়া…” → সঙ্গীর প্রত্যাশা
-তৃতীয় স্তবক:“যে ফিরিয়া আসিয়া দিনের অন্তে…” → নিঃস্বার্থ প্রেমের কল্পনা
-চতুর্থ স্তবক:”যে আমার উন্মাদ উচ্ছ্বাস…” →গভীর আবেগের স্বীকৃতি
– পঞ্চম স্তবক:“সে মানব, যে আমাকে হৃদয়ের গভীরে…” → পরিপূর্ণতার ইঙ্গিত
২. প্রতীক ও উপমার শক্তি
-“প্রভাতের প্রথম রবি”:নতুন শুরু, আশার আলো
-“অমিয় বর্ষা”:ভালোবাসার শুদ্ধতা
– “হারাইয়া যাইবে আমার সকল ভয়”:নিরাপত্তার অনুভূতি
সামাজিক প্রাসঙ্গিকতা
১. আধুনিক সম্পর্কের সংকট
“আজকের প্রযুক্তিনির্ভর সময়ে সম্পর্কগুলো যেন রঙিন পিক্সেলের মতো——ঝলমলে কিন্তু ক্ষণিকের অতিথি।”
“পদ্যটি সেইসব মানুষের জন্য নিবেদিত যারা “সত্যিকারের” ভালোবাসার সন্ধানে,যেখানে শুধু ফিজিক্যাল অ্যাট্রাকশন নয়,বরং আত্মিক আশ্রয়ও আছে।”
২. নিঃসঙ্গতার মহামারী
“পৃথিবীব্যাপী নিঃসঙ্গতা আজ এক নীরব মহামারীর রূপ নিয়েছে।ভার্চুয়াল জগতের কোলাহলে ডুবে থেকেও মানুষ রয়ে গেছে একা।”
“পদ্যের কেন্দ্রীয় চরিত্রও সেই একাকীত্বে ডুবে আছে,তবুও অন্তরে লালন করছে এক মধুর প্রত্যাশা—কোনো একদিন কেউ এসে তার শূন্যতাকে ভালোবাসায় পূর্ণ করে তুলবে।”
৩. পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীর অনুভব
“যদিও কবিতাটি লিঙ্গনিরপেক্ষ এক অভিব্যক্তি,তবুও এটি নারীর সংবেদনশীলতার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে।”
“সামাজিক দৃষ্টিতে নারীর অনুভূতিগুলোকে প্রায়শই “অতিরঞ্জিত” বলা হয়, কিন্তু কবিতাটি বলছে—ভালোবাসা মানেই তো আবেগের স্বাধীনতা!”
সাহিত্যিক প্রেক্ষাপট
– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের “একাকী”: একাকীত্বের দর্শন
– জীবনানন্দ দাশের “আবার আসিব ফিরে”: প্রত্যাশার কবিতা
– কাজী নজরুল ইসলামের “বিদ্রোহী”:আবেগের বিদ্রোহ
সমাধানের পথ
১. আত্মপ্রেমের গুরুত্ব
“যে আমাকে ভালোবাসবে”—এই প্রত্যাশার আগে “আমি নিজেকে ভালোবাসি” এই মনোভাব গড়ে তোলা জরুরি।
২. যোগাযোগের সংস্কৃতি
ভালোবাসা শুধু পাওয়ার বিষয় নয়,দেওয়ারও।প্রত্যেক সম্পর্কে স্বচ্ছতা ও খোলামেলা আলোচনা জরুরি।
৩. মানসিক স্থিতির প্রতি সচেতনতা
নিঃসঙ্গতা কখনও কখনও মনোজাগতিক চাপ,হতাশা কিংবা উদ্বেগের জন্ম দিতে পারে।তাই প্রয়োজনবোধে পেশাদার সহায়তা নেওয়াটা দৃষ্টিভঙ্গির পরিপক্বতার পরিচায়ক।
কবিতার পিছনের গল্প
“সুখের কিছু মুহুর্ত কুড়ানোর জন্য কিংবা সুখের সম্রাজ্যে গড়ার জন্য আমরা সর্ম্পকে জড়াই,তখন চোখে থাকে স্বপ্ন,বুকে থাকে প্রবল আশা।তখন আবেগ এতোটাই কাজ করে বিবেক হয়ে যায় দিশেহারা।তখন ভুলকে ফুল ভেবে গ্রহণ করে কাঁটার আঘাতেও তীব্র প্রশান্তি অনুবভ হয়।”
“কিন্তু ভুল তখনই স্মরণ হয় যখন কাঁটার আঘাত তীব্র হয়ে উঠে,যন্ত্রণা সহ্য করার সীমারেখা অতিক্রম করে।তখন আমরা জীবন থেকে সবচেয়ে ভালোবাসার মানুষকে দূরে সরাতে বাধ্য হই,কেউ কেউ বা নিজে থেকেই জায়গা বা ব্যক্তিবদল করে নেয়।”
“এই সব পীড়া যখন আমাকে গভীর ভাবে আঘাত করল তখন এই কবিতার জন্ম হল।মনে হচ্ছিল হৃদয়ের সব আক্ষেপ গুলো কলমে-কাগজে বেরিয়ে এলো,যা এতো কাল আমি কাউকে খুলে বলার শব্দবিন্যাস করতে পারছিলাম না।”
“এই কাব্যের প্রতিটি লাইনে লুকিয়ে আছে নিজস্ব যন্ত্রণা।হয়তো অতীতের ভালোবাসায় আঘাত আমাকে এখনো পীড়া দেয়,কিংবা আজও অপেক্ষার প্রহরে সেই “মানবপ্রাণ”-এর, যে আমার একাকীত্ব মুছে দেবে।”
পাঠকের চিন্তার খোরাক
- ১. “আমি কি কখনো এমন কাউকে খুঁজেছি, নাকি আমিই এমন কেউ হতে পেরেছি?”
২. “ভালোবাসা কি শুধুই পাওয়া, নাকি দেওয়ার নাম?”
আপনার মতামত জানান:
- “এই পদ্য পাঠ করে আপনি কী অনুভব করলেন? আপনার জীবনের কোনো অপেক্ষার গল্প কি এখানে ফুটে উঠেছে?ইনবক্স করুন অথবা আমাদের ফেসবুক পেইজে “নব যুগের কাব্য” মেসেজ করুন।”
শেষ কথা: অপেক্ষার অবসান হোক
“হে ভাগ্য!” “এই বাংলা প্রেমের কবিতা আমাদের মনে করিয়ে দেয়—ভালোবাসা শুধু খোঁজার বিষয় নয়,তৈরি করবারও।হয়তো সেই “মানবপ্রাণ” আপনিই হচ্ছেন,যে কারো জন্য আলো হয়ে উঠতে পারে।”
“ভালোবাসা কখনোই হারায় না,হয়তো সময় নেয়, হয়তো পথ ভুলে,কিন্তু একদিন ঠিকই ফিরে আসে।”
আবার কিছু কিছু ভালোবাসা হৃদয়ে থেকে যায় কিন্তু জীবন থেকে আজীবনের জন্য হারিয়ে যায়।যা কিছু জীবন থেকে হারায় তার জন্য আফসোস না করে জীবনকে এগিয়ে নিয়ে পথচলাই সফলতা এনে দিতে পারে।
📌ডিসক্লেইমার:”এই বিশ্লেষণে ব্যবহৃত কবিতাংশ শিক্ষামূলক উদ্দেশ্যে রচিত। কোনো ব্যক্তি বা ঘটনার সাথে মিল থাকলে তা সম্পূর্ণ কাকতালীয়।এই কন্টেন্টের কোনো অংশ অনুমতি ছাড়া কপি করা নিষিদ্ধ।”

মনের কথা
আহ্লাদি মেয়ের কবিতা | আহ্লাদি, রাগী ও ভালোবাসায় ভরা এক চরিত্র

” আহ্লাদি মেয়ে”
মিজানুর রহমান
আহ্লাদে গা ছম ছম করে মেজাজ আছে বেশ,
পান থেকে চুন খসলেই রাগের নেই তো শেষ।
ময়না, টিয়া, বাবুই পাখি হাজার নামের সুর,
বাড়ায় যে তার গায়ের জ্বালা দুঃখ হয় না দূর।
দেও না যতই মন্ডা-মিঠাই তাহার কোল টি ভরে,
আগে কেনো দেও নি তারে সেই যাতনায় পুড়ে।
সোনা, জাদু, মানিক বলে যতই তারে ডাকি,
ভাবখানা সে বিলের বোয়াল আমরা সবাই টাকি।
ভালো-মন্দ বুঝে না সে ধারে না কারো ধার,
সামান্যতেই ভেঙে পড়ে ধৈর্য্য নাই যে তার।
মনে তাহার বিশাল মায়া স্বভাব গুণে জেদী,
পড়শীরা সব ডাকে তারে এক নামে “আহ্লাদি”
মেয়ের কবিতা | আহ্লাদি, রাগী ও ভালোবাসায় ভরা এক চরিত্র
মূলভাব:
কবিতার মূলে আছে এক রাগী-আদুরে মেয়ে
এই কবিতাটি একটি আহ্লাদি, আদুরে, রাগী মেয়ের চরিত্র তুলে ধরেছে। তার কথায় থাকে আবেগ, অভিমানে চোখ ভিজে যায়, আবার আদরে সে পুরো ঘর মাতিয়ে তোলে।
এমন মেয়েকে সবাই চিনি – কখনো প্রেমে, কখনো পরিবারের ছোট বোন রূপে। কবিতায় তার রাগ, অভিমান, ভালোবাসা, ও স্বভাবের বৈচিত্র্য হাস্যরসের সঙ্গে চিত্রিত হয়েছে।
তার রাগ, অভিমান আর আবেগ মিলে তৈরি হয়েছে হাস্যরসপূর্ণ এক মজার চরিত্র।
সে যেমন জেদি, তেমনি ভালোবাসায় ভরা।আহ্লাদি মেয়ের কবিতা আদুরে, রাগী ও ভালোবাসায় ভরা এক মেয়ের প্রতিচ্ছবি।
আহ্লাদি মেয়ে কাকে বলে?
আহ্লাদি মেয়ে মানে এমন একজন, যে খুব আদুরে হয়। সে অল্পতেই রেগে যায়, আবার ছোট্ট একটা ভালোবাসাতেই মন গলে যায়।তার আচরণে থাকে জেদ, কথায় থাকে আবেগ।
এমন মেয়েরা মায়াবী হয়, ভালোবাসা দিতে জানে, আবার অভিমান করতেও দারুণ পটু।
একটি মেয়ে যার মধ্যে থাকে বাচ্চাদের মতো আহ্লাদ, রাগ, অভিমান, আবার থাকে অগাধ ভালোবাসা।
আমাদের আশেপাশেই এমন আহ্লাদি মেয়ে কমবেশি সবাই চিনি।
হয়তো সে আমাদের প্রেমিকা, বোন, বন্ধু বা ক্লাসমেট। এই কবিতা এমনই একটি চরিত্রের মজার ও মিষ্টি প্রতিচ্ছবি।
ভালোবাসার আদুরে প্রকাশ
এই মেয়েটি আমাদের চারপাশের পরিচিত। কখনো সে প্রেমিকা, কখনো ছোট বোন।
কবিতায় তার মিষ্টি আচরণ আর হালকা রাগের চিত্র ফুটে উঠেছে।
আহ্লাদি মেয়ের কিছু চেনা বৈশিষ্ট্য
সহজে রেগে যায়
একটুখানি ভুলেও রেগে যায়। তার রাগ যেন বাচ্চার মতো, আবার মিষ্টিও।
অভিমান পোষে
ভালোবাসা না পেলে খুব অভিমান করে। কিন্তু একটু আদরেই সে গলে যায়।
জেদী স্বভাবের
নিজের পছন্দে অটল থাকে। কেউ বোঝাতে পারলেও সে নিজের মতো ভাবতেই ভালোবাসে।
ভালোবাসায় ভরা
একবার ভালোবাসলে তার মন পুরোটা উজাড় করে দেয়। সে কখনো ফাঁকি দেয় না।
উপসংহার
এই আহ্লাদি মেয়ের কবিতা আমাদের জীবনের বাস্তব চরিত্রকে ছুঁয়ে যায়। এমন মেয়েরা যেমন জেদি, তেমনি ভালোবাসায় ভরা। তারা আমাদের জীবনকে রঙিন করে তোলে। তাদের নিয়ে লেখা এই কবিতা পাঠকের হৃদয় জয় করবেই।
আহ্লাদি মেয়েরা আমাদের জীবনের রঙ। তাদের মিষ্টি রাগ, আদুরে আচরণ, আর একরোখা ভালোবাসা জীবনের চেনা গল্প।
এই আহ্লাদি মেয়ের কবিতা শুধু হাসায় না,মনেও জায়গায় করে নেয়। তাই এই কবিতা কেবল শব্দ নয়, জীবনেরই প্রতিচ্ছবি।
মনের কথা
মেঘের দেশে প্রেমের কবিতা – বৃষ্টিভেজা ভালোবাসার নিঃশব্দ গল্প

তোরে লইয়া মেঘের দেশে
তামান্না রহমান
চলনা তোরে লইয়া যাই,মেঘে ঢাকা এক দেশে।
যেখানে নীরবতা বাজে,
বাতাস বাজে মৃদু বেশে।
হাল্কা বৃষ্টি পড়ে টুপটাপ,পাতায় জমে স্বপ্ন ভেজা।
তুই আর আমি পাশাপাশি,
আকাশ হাসে মৃদু সেজা।
হঠাৎ নামে বৃষ্টি জোরে, হাওয়ায় গেয়ে ওঠে গান।
ছাতিম গাছের তলে দাঁড়াই,
ভিজি দুজনে প্রাণপ্রাণ।
চোখে চোখে খেলে ভাষা, ঠোঁটে জমে মৌনতা।
তুই আমি মিলায়ে যাই,
নিঃশব্দে গড়ে ভালোবাসা।
তুই রাগ করিস যখন, মনটা ভরে যায় ব্যথায়।
আমি যাই পদ্মপুকুরে,
তুলতে শাপলা হাতে নাই।
বলব, “মনামণির মা, রাগ করে লাভ কী হয়?”
প্রেমের কথা বলার সময়,
মুখ ভারে মন নড়ে কয়।
একটা শাপলা গুঁজে দেই, তোর কানের পাশে।
তুই দেখাস ময়না পাখি,
রূপে ঝলমল হাসে।
তুই হেসে বলিস, “ঢং কইরো না, থাকো পাশে আজ।”
আমি বলি, “চলো গোসল করি,
খাই ভাতের সাঝ।”
বৃষ্টিতে কাঁপে গা, ভালোবাসা নামে ধীরে।
তুই পাশে থাকিস চুপে,
সময়টা কাটে সুধীরে।
তোর চোখে জাদু আছে, মনের ভাষায় ভরা।
সে ভাষায় আমি লিখি,
ভালোবাসা শত ধারা।
হাত ধরে রাখি তোকে, ছুঁয়ে যাই স্বপ্নের জল।
চুপি চুপি প্রেম জমে,
কুয়াশা ঘেরা এক চল।
তুই রাগ করিস, আমি হাসি, প্রেম খেলে হৃদয়ে।
জীবনটাও থেমে যায়,
তোর চাহনির ছায়ায়।
রাত নামে ধীরে ধীরে, চাঁদ আসে নীরবে।
তুই ঘুমাস পাশে আমার,
হাত রাখিস প্রেমে।
সকাল হলে বলি আবার, “চল মেঘের দেশে যাই।”
তুই থাকিস পাশে আমার,
জীবন হোক যাই যাই।
মেঘের দেশে প্রেমের কবিতা – বৃষ্টিভেজা ভালোবাসার নিঃশব্দ গল্প
মূলভাব:
ছাতিম গাছের তলে
চলনা তোরে লইয়া আজ মেঘের দেশে যাই,
যেহানে শুধু মেঘ থাকব,আর হাল্কা হাল্কা বৃষ্টি অইব।
হঠাৎ যখন মুষলধারে বৃষ্টি হইব,
তুই আর আমি ছাতিম গাছের তলে গিয়া দাঁড়াই থাকুম,
যেন তুই আর আমি দু’টা পাখি সমস্ত আকাশ,সমস্ত পৃথিবী শুধু তোর আর আমার।
তুই যখন রাগ করবি আমি তোরে কুসুম তলীর পদ্মপুকুর থেকে এক গুচ্ছ শাপলা দিয়া কমু কইগো
আমার মনার মা এতো রাগলে কি চলব,দু’জন মিললা প্রেম-পিরিতের আলাপও তো করণ লাগব।
আহো তোমার কানের পাশে একটা শাপলা ফুল গুঁজে দেই,দেহি আমার ময়না পাখিটাকে কেমন দেহায়।
আর আমি তখন এক গাল হেসে কইব হইছে আর ঢং করন লাগব না।
গোসলডা করইয়া আহো ভাত খাইবা।
ভালোবাসার ছায়ায় এক অনন্ত যাত্রা
জীবনের এক নিঃশব্দ কোণে ভালোবাসা যখন গেঁথে যায় মেঘের ভিতর, তখন শুরু হয় এক নতুন গল্প—যেখানে শব্দ নেই, আছে শুধু অনুভব। “মেঘের দেশে প্রেমের কবিতা” হলো এমন এক গল্প, যেখানে বৃষ্টি, হাওয়া, ছাতিম গাছ আর প্রেম একত্রে রচনা করে এক স্বপ্নঘেরা মুহূর্ত।
তুই আর আমি: নিঃশব্দ ভালোবাসার ভাষা
এই কবিতায় ‘তুই’ আর ‘আমি’ একসাথে হেঁটে চলে মেঘে ঢাকা এক দেশে। সেখানে আকাশ হাসে, পাতায় জমে স্বপ্ন। হঠাৎ ঝরেপড়া বৃষ্টির মতোই আবেগ গড়িয়ে পড়ে, গায়ে লাগে ভালোবাসার স্নিগ্ধতা। প্রেম এখানে মৌন, কিন্তু গভীর। ঠোঁটে নেই কথা, তবু চোখে চোখে খেলে ভালোবাসার ছায়া।
রাগ-ভালোবাসার মিষ্টি মান-অভিমান
প্রেম মানেই তো শুধু হাসি নয়—রাগ, অভিমান, আবার মিলন। কবিতায় প্রেয়সী যখন রাগ করে, প্রেমিক যায় পদ্মপুকুরে, হাতে শাপলা তুলতে। প্রেমিকের কণ্ঠে শোনা যায়, “মনামণির মা, রাগ করে লাভ কী?”
এ যেন সেই শাশ্বত ভালোবাসা যেখানে অভিমানও এক ধরনের ভালোবাসার রূপ।
শাপলা ফুলে গাঁথা প্রেমের মালা
শাপলা গুঁজে দেওয়ার দৃশ্যটি প্রেমের এক চিরন্তন প্রতীক। রূপে ঝলমল প্রেমিকা হেসে বলে, “ঢং কইরো না।”
এই বিনিময়ে দুজনের মাঝে প্রেম গড়ে ওঠে যেন এক অমলিন বন্ধনে, যেখানে শরীর ভিজে ভালোবাসায়, আর আত্মা ভরে যায় মিলনের আশায়।
চুপিচুপি ভালোবাসার সুর
মেঘের দেশে প্রেম শুধু শব্দে নয়, আবেগে দিয়ে লিখা। কবিতায় হাত ধরে রাখা, স্বপ্ন ছোঁয়া, চুপি চুপি প্রেম জমা—সব মিলিয়ে গড়ে ওঠে এক নিখুঁত রোমান্টিক আবহ।
প্রেম এখানে চোখের ভাষায় লেখা হয়, আর কুয়াশার মতো ছড়িয়ে পড়ে মনজুড়ে।
চাঁদের আলোয় শেষ না হওয়া প্রেমের গান
রাত নামে ধীরে, চাঁদ আসে নিরবে। পাশে ঘুমিয়ে থাকা প্রেয়সীর মুখে যেন শান্তির পরশ।
সকাল হলে আবার নতুন করে শুরু হয় প্রেমের গল্প—“চলো মেঘের দেশে যাই।”
এই কবিতা যেন প্রেমের এক ঘূর্ণাবর্ত, যেখানে প্রতিদিনের ভালোবাসা নতুন করে রঙ নেয়।
হৃদয়ের গভীর থেকে লেখা মেঘে ঢাকা প্রেম
এই কবিতার মূল সুর এক নিঃশব্দ ভালোবাসা, যেখানে আবেগ প্রকাশ পায় বৃষ্টির টুপটাপ শব্দে, শাপলা ফুলে, আর চোখের ভাষায়।
‘মেঘের দেশে প্রেমের কবিতা’ শুধু একটি প্রেমগাঁথা নয়, বরং এক আবেগভরা যাত্রা—যেখানে দুটো হৃদয় মিলেমিশে এক হয়ে যায়।
উপসংহার:
মেঘের দেশে প্রেমের এই কবিতা যেন এক নিঃশব্দ ভালোবাসার চিত্ররূপ। বৃষ্টিভেজা প্রতিটি মুহূর্ত, শাপলা হাতে প্রেম নিবেদন, আর মনের গভীর ভাষা মিলেমিশে তৈরি করে এক স্বপ্নঘেরা আবহ। এ শুধু কবিতা নয়, হৃদয়ের প্রতিটি ধ্বনি ও অনুভবের প্রতিচ্ছবি। এই কবিতার প্রতিটি ছত্রে প্রেম যেমন রোমান্টিক, তেমনি বাস্তবতার ছোঁয়ায় মাখানো। পাঠক যেন অনুভব করেন, তাঁর নিজের জীবনের ভালোবাসার এক টুকরো গল্প। এইভাবেই, মেঘের দেশে প্রেম কখনও পুরনো হয় না—সে বেঁচে থাকে হৃদয়ের আকাশে চিরকাল।
মনের কথা
জটিল পৃথিবী-কিন্ত আমাদের চিন্তার কাছে সহজ মনে হয়

প্রতিভা
মিজান রহমান
সহজ ভাষার বুলবুলি টা,
বলতে চায় যে মনের কথা।
নেই তো কোনো জ্ঞানী শ্রোতা
বুঝবে তাহার সহজ কথা।
একটু জটিল লিখতে গেলে,
নানান প্রশ্ন আসে হেথা।
সবাই যখন প্রশ্ন করে
ধরে পাখির মাথা ব্যাথা।
উদাস মনে পাখি তখন
লুকিয়ে রাখে মনের ব্যাথা।
সরল মনের সহজ কথা
পায় না খুঁজে কুটিলতা।
হয় না তখন বিকশিত
পাখির মনের “প্রতিভা” টা।
উপশিরোনামঃ সহজ ভাবনার জটিল পৃথিবী
মূলভাব:
এই কবিতায় ফুটে উঠেছে এক সহজ-সরল প্রাণের অভিমানভরা ব্যথা।
‘সহজ ভাষার বুলবুলি’ বলতে বোঝানো হয়েছে সেইসব মানুষকে, যারা মনের গভীর থেকে সত্য কথা বলতে চায়।
তারা অলংকারে নয়, কথা বলে হৃদয়ের ভাষায়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে, এমন সহজ কথার জন্য আজকাল সমাজে নেই তেমন শ্রোতা। যারা আছে, তারা বোঝে না।
যারা বোঝার ভান করে, তারা জটিল বিশ্লেষণ করতে গিয়ে সেই সরল কথার মর্ম হারিয়ে ফেলে।
বুলবুলিটি আসলে আমাদের চারপাশের সেই সব অনুভূতিপ্রবণ মানুষদের প্রতীক, যারা সহজভাবে মনের কথা বলতে চায়।
কিন্তু এই সমাজে সহজ কথা আর সহজ ভাবে নেওয়ার মানসিকতা হারিয়ে যাচ্ছে।
কেউ যদি একটু জটিল বা ব্যতিক্রমী কিছু বলে, তখন নানারকম প্রশ্ন, ব্যাখ্যা আর বিচার এসে পড়ে তার উপর। তখন সেই পাখির মনে তৈরি হয় এক অভিমান, এক ব্যাথা।
এই কবিতায় সেই বিষণ্ণতারই এক নিঃশব্দ ছবি আঁকা হয়েছে। প্রশ্নে প্রশ্নে জর্জরিত হয়ে পড়ে মনের ওপর চাপ।
তখন বুলবুলিটি আর তার প্রতিভা বিকশিত হতে পারে না।
তার মধ্যে থাকা সৃষ্টিশীলতা, আবেগ, ও বুদ্ধিমত্তা লুকিয়ে যায় গভীর কোন গহ্বরে।
কবি এখানে বলছেন—যদি কেউ সত্যিই শুনতে চায়, তবে সে যেন আগে বুঝতে শেখে।
এই জটিল পৃথিবী আমাদের কাছে সহজ মনে হয়,তাই বাঁচার আকুতি অনেক।
এই জটিল পৃথিবী এবং জটিল পৃথিবী’র মানুষ গুলো আরও বেশি জটিল।
তবে এখানে কবি কেবল আক্ষেপ করেননি, তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন একটি চমৎকার শিক্ষার দিকেও—আমরা যদি মানুষকে তাদের মনের মতো করে প্রকাশের স্বাধীনতা দিই, তাদের সহজ কথাকে যদি শ্রদ্ধা করতে শিখি, তাহলে সমাজ আরও মানবিক হবে।
প্রতিভা আর আবেগ একসঙ্গে বিকশিত হবে।
-
কবিতার রাজ্য2 months ago
সময় বড্ড দামী- দেওয়া মানেই কি ভালোবাসার গুরুত্ব?
-
কবিতার রাজ্য2 months ago
“অবিচ্ছিন্ন ভালোবাসা: সম্পর্কের এক অনন্য দার্শনিকতা”
-
সৃজনশীলতা2 months ago
নিখোঁজ ভালোবাসা – একাকিত্বের আধুনিক অভিধান
-
রোমান্টিক সাহিত্য2 months ago
“রাগ ও ভালোবাসার দ্বন্দ্ব: একটি আত্মনিবেদিত প্রেমের পদ্য”
-
অনুপ্রেরণার কবিতা2 months ago
একদিন এসো সময় করে – প্রেমের অপেক্ষার কবিতা
-
সৃজনশীলতা2 months ago
হৃদয়স্পর্শী বাংলা কবিতা | স্মৃতির অনামিকা ধরে এক প্রেমযাত্রা
-
সৃজনশীলতা2 months ago
ভালোবাসার বিনিময়ে হৃদয় | একটুকরো অকৃত্রিম ভালোবাসার সন্ধানে
-
অনুপ্রেরণার কবিতা2 months ago
ভালোবাসার চোখে কবিতার জন্ম হয় | প্রেম চির স্বগীয় সুখ