সৃজনশীলতা
ভালোবাসার বন্ধন | হৃদয়ছোঁয়া প্রেমের ছন্দে বাঁধা এক গল্প

তুমি কি আমার ছন্দ হবে
মিজানুর রহমান
তুমি কি আমার ছন্দ হবে…?
পুরো কবিতা জুড়ে।
ক্ষনে ক্ষনে ভালবাসার শিকল পড়াবো পায়ে…।
হও না একটু আমার আকাশ উড়বো ঘুড়ির মতো;
তোমার সীমা খুঁজতে গিয়ে সুতো কাঁটবো শত;
চলার পথের সঙ্গী হবে…? আমার হাতটি ধরে;
লক্ষ আছে তোমায় নিয়ে যাবো বহুদূরে….
এক পৃথিবী হলে না হয় তুমি মাটির মতো;!!
ক্লান্ত হয়ে তোমার বুকে ফিরবো অবিরত।
তুমি কি আমার গল্প হবে….?
হাজার কথার রেষ্;
তোমায় নিয়ে করবো শুরু…
তোমায় দিয়ে শেষ..।
ভালোবাসার বন্ধন কবিতা: হৃদয়ের বাঁধনে বাঁধা এক অনন্ত প্রেমগাথা
মূলভাব:
ভালোবাসার বন্ধনে স্বপ্নময় জীবন
এই কবিতাটি প্রেমের এক গভীর অনুভবকে তুলে ধরে। এখানে কবি প্রেমিক বা প্রেমিকাকে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন—”তুমি কি আমার ছন্দ হবে?”
এই প্রশ্নের মধ্যেই মিশে আছে এক জীবনসঙ্গীর আকাঙ্ক্ষা।
প্রেম এখানে শুধু অনুভব নয়, এক গভীর জীবনযাত্রার অংশ।
কবি চান প্রিয় মানুষটি হোক তার জীবনের আকাশ, যার সীমা খুঁজতে গিয়ে ভালোবাসার সুতো ছিঁড়ে ফেলতে রাজি তিনি।
কবি সুতা ছেঁড়া ঘুরিয়ে হয়ে ভালোবাসার আকাশে উড়বে,তারপর প্রিয় মানুষটি আজীবনের জন্য তার হোক।
রূপান্তরের ছায়া জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে কবি খুঁজে পান ভালোবাসার নতুন মানে।
কবিতা কাছে ভালোবাসা মানেই হল স্বর্গ,ভালোবাসা পেলে স্বর্গের সুখ পৃথিবীতেই উপভোগ করা যায়,স্বর্গে যেতে হয় নাহ।
এই কবিতায় প্রেম শুধু আবেগ নয়, বরং এক ভরসার আশ্রয়।
ক্লান্ত জীবনের শেষে তিনি ফিরতে চান সেই ভালোবাসার বুকে, যেমন করে এক পথিক ক্লান্ত হয়ে ফিরে আসে মাটির কোলে।
রূপান্তরের মতো প্রেম এখানে বদলে দেয় জীবনের গতিপথ। সম্পর্কের বন্ধন হয়ে ওঠে নতুন এক গল্পের শুরু, যেখানে শেষও প্রেম দিয়েই হয়।
ভালোবাসার বন্ধনে স্বপ্নময় জীবন-ভালোবাসার বন্ধনের জীবন স্বপ্নময় হয়ে উঠে।জীবনের অনাবিল সুখ বিরাজ করে।
প্রতিটি ছত্রে ভালোবাসার যে গভীরতা ফুটে ওঠে, তা একজন প্রিয় মানুষের সান্নিধ্যে জীবনের পূর্ণতা খোঁজে।
শেষ পর্যন্ত কবি চান, প্রিয়জন হয়ে উঠুক তার কবিতার ছন্দ, জীবনের গল্প, ক্লান্তির আশ্রয় এবং পথচলার একমাত্র সঙ্গী।
এই প্রেমই যেন রূপান্তর ঘটায় জীবনের প্রতিটি অধ্যায়ে।
এই কবিতার মূল ভাব তাই—ভালোবাসার রূপান্তর, যেটি ছন্দ, গল্প, আকাশ ও মাটির মতো জীবনকে পূর্ণ করে তোলে।
প্রেমের ছন্দে বাঁধা এক প্রশ্ন
“তুমি কি আমার ছন্দ হবে…?”—এই প্রশ্ন শুধু একটি কবিতার পঙ্ক্তি নয়, এটি এক প্রেমিক হৃদয়ের অনুরণন।
এই ভালোবাসার বন্ধন কবিতা আমাদের নিয়ে যায় এক স্বপ্নের ভেতর, যেখানে ভালোবাসা শুধু অনুভূতির নয়, বরং জীবন চলার নিরবিচ্ছিন্ন সঙ্গী। প্রতিটি লাইন যেন একটি করে হৃদয়স্পর্শী স্বীকারোক্তি।
ভালোবাসার শিকলে বন্ধন, স্বাধীনতায় বাঁধা
এই কবিতায় প্রেমকে বন্দিত্ব নয়, বরং স্বাধীনতায় বাঁধা এক আত্মিক সম্পর্ক হিসেবে দেখা হয়েছে।
“ক্ষণে ক্ষণে ভালোবাসার শিকল পরাবো পায়ে”—এই লাইনটিতে রয়েছে এক গভীর মমতা, যেখানে বন্ধন মানেই ভালোবাসা, আর ভালোবাসা মানেই সম্মতির বন্ধনে বাঁধা থাকা।
তুমি আমার আকাশ হবে… আমি ঘুড়ি
কবি প্রেমিকাকে চেয়েছেন আকাশের মতো বিস্তৃত ভালোবাসায়, যেখানে প্রেমিক উড়বে ঘুড়ির মতো। কিন্তু সেই উড়ানও সীমাবদ্ধ, কারণ সে সুতোয় বাঁধা।
প্রেমের এই দ্বন্দ্ব—স্বাধীনতা ও সংযুক্তির—দারুণভাবে উঠে এসেছে এই ভালোবাসার বন্ধন কবিতা-তে।
চলার পথে সহযাত্রী: একটি হাতের প্রতিশ্রুতি
“চলার পথের সঙ্গী হবে…? আমার হাতটি ধরে”—এই বাক্যটি একটি সম্পর্কের গভীর প্রতিশ্রুতি বহন করে।
শুধু প্রেম নয়, জীবনের প্রতিটি বাঁকে একে অপরকে পাশে চাওয়ার আকাঙ্ক্ষা ফুটে উঠেছে এখানে। এটি সেই নিঃশব্দ ভাষা, যা একে অপরকে না বলেও বলে দেয়—“আমি আছি”।
একটি পৃথিবী, একটি মাটি, একটি হৃদয়
প্রেমিক কল্পনা করেন একটি পৃথিবী, যেখানে প্রিয়তমা হবে তার জন্য মাটি। ক্লান্ত হৃদয় সেই মাটিতে আশ্রয় পাবে।
এই কাব্যিক রূপক দ্বারা বোঝানো হয়েছে—প্রেমিক তার প্রেমিকার মাঝে খুঁজে পান নিরাপত্তা, আশ্রয় আর শান্তি। এটা নিছক ভালোবাসা নয়, বরং জীবনের অবিচ্ছেদ্য ভিত্তি।
তুমি কি আমার গল্প হবে…?
এই লাইনটি কবিতার সবচেয়ে শক্তিশালী প্রশ্নগুলোর একটি। একজন প্রেমিক তার প্রিয়জনকে শুধুমাত্র স্মৃতি নয়, তার জীবনের প্রতিটি অধ্যায়ের অংশ করে তুলতে চান।
“হাজার কথার রেষ্; তোমায় নিয়ে করবো শুরু… তোমায় দিয়ে শেষ”—এই লাইনটি এক চিরন্তন প্রেমের গল্পের জন্ম দেয়, যেখানে শুরু এবং শেষ একই ব্যক্তিকে ঘিরে।
মূলভাব: ভালোবাসার বন্ধন মানেই একাত্মতা ও নির্ভরতার ছায়া
এই ভালোবাসার বন্ধন কবিতা কেবল একটি প্রেমের প্রকাশ নয়, এটি হলো এক আত্মিক সংযোগ, যেখানে ভালোবাসা মানে একই সঙ্গে স্বাধীনতা ও বন্ধন।
কবি তার প্রিয়জনকে চেয়েছেন জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে। প্রেমের পথ যতই চ্যালেঞ্জিং হোক না কেন, যখন দু’জন মানুষ হৃদয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হয়, তখন তারা একসঙ্গে একটি নতুন পৃথিবী তৈরি করে নিতে পারে।
এই কবিতায় প্রেম রয়েছে, শ্রদ্ধা রয়েছে, আবার দায়িত্ব ও স্বপ্নের ছবি আঁকা রয়েছে কল্পনার তুলিতে।
সৃজনশীলতা
স্বার্থান্বেষী মানুষ: সমাজের মুখোশ খুলে দেওয়া বাস্তব জীবনের চিত্র

” মানুষ”
মিজানুর রহমান
সৃষ্টিকর্তার সেরা সৃষ্টি আজব এক জাতি,
সারাক্ষণ ই ব্যস্ত থাকে ছিঁড়তে স্বজনপ্রীতি।
নিজের বেলায় গুণের ভান্ডার, দোষের নাই তো লেষ;
খানিক সুতো খুঁজে পেলেই চড়কি ঘুরায় বেশ।
কেউ বা করে পরোপকার মাথায় রেখে হাত,
কেউ বা আবার পরণিন্দায় থাকে দিবা-রাত।
পরচর্চায় কেউ বা করে নিজের স্বার্থ হাসিল,
কেউ বা আবার দুই পাখি মারে ছুড়ে একটি ঢিল।
স্বার্থান্বেষী হয়ে সবাই মিটায় মনের সাধ,
ভুলে যায় সবাই রক্তের স্রোতে যায় না দেয়া বাঁধ।
এমনি করে যায় পেরিয়ে মাসের পরে বছর,
একটা সময় বাঁধন ছেড়ে হয়ে যায়রে পর।
নিজ খেয়ালে উড়ায় সবাই মনের রঙিন ফানুস,
সৃষ্টিকর্তা সেরা সৃষ্টি’র নাম দিয়েছেন মানুষ..!!!
স্বার্থান্বেষী মানুষ কবিতা: এক নির্মম বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি
কবিতার পরিচিতি
“মানুষ” শিরোনামে লেখা এই কবিতাটি বাস্তব জীবনের প্রতিচ্ছবি।
এখানে মানুষ নামক শ্রেষ্ঠ সৃষ্টির অন্তর্নিহিত দ্বন্দ্ব, আত্মস্বার্থপরতা এবং সমাজের বাস্তব চিত্র ফুটে উঠেছে।
মানুষ কীভাবে স্বজনপ্রীতি, পরনিন্দা ও স্বার্থের জালে আটকে পড়ে—এই কবিতায় তা অনুপম ছন্দে তুলে ধরা হয়েছে।
মূল ভাবনা: স্বার্থের জালে বন্দি মানুষ
স্বার্থান্বেষী মানুষ কবিতা আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়, আমরা কীভাবে নিজেদের স্বার্থকে বড় করে দেখি।
কারো ভালো করতে গিয়ে যদি নিজে ক্ষতির মুখে পড়তে হয়, তাহলে সেই ভালোবাসা আর থাকে না।
এই আত্মকেন্দ্রিকতা ধীরে ধীরে আমাদের মানবিকতা নষ্ট করে দিচ্ছে।
স্বজনপ্রীতির বৃত্তে মানুষ
“সারাক্ষণই ব্যস্ত থাকে ছিঁড়তে স্বজনপ্রীতি।”
এই পংক্তি বুঝিয়ে দেয়, মানুষ নিজের স্বজন বা পরিবারের কাছেও স্বার্থ খোঁজে।
আত্মীয়তার সম্পর্কে যেখানে ভালোবাসা থাকার কথা, সেখানে চলছে নিজের লাভের হিসাব।
সমাজের মূলে থাকা বিশ্বাস ধীরে ধীরে ক্ষয়ে যাচ্ছে এই মানসিকতার কারণে।
গুণের ঢাক, দোষের কাঁধে বোঝা
“নিজের বেলায় গুণের ভাণ্ডার, দোষের নাই তো লেষ।”
এখানে কবি ইঙ্গিত দিয়েছেন এক নির্মম বাস্তবতার দিকে।
আমরা নিজের ভুল স্বীকার করি না, অথচ অন্যের সামান্য ভুলকে বড় করে দেখি। introspection বা আত্মসমালোচনার অভাব আমাদের স্বার্থপর করে তোলে।
পরচর্চা ও পরনিন্দার বিষাক্ততা
“পরচর্চায় কেউ বা করে নিজের স্বার্থ হাসিল।”
সমাজে এমন মানুষ আছে যারা অন্যের দুর্বলতা খুঁটে নিজের লাভের পথ খোঁজে।
পরনিন্দা শুধু একজনকে ছোট করে না, এটি সম্পর্কের মধ্যে বিষ ঢেলে দেয়।
এই স্বভাব এক বিষাক্ত পরিবেশ তৈরি করে, যা সমাজে দূরত্ব তৈরি করে।
সমাজের দ্বিমুখী চিত্র
স্বার্থান্বেষী মানুষ’কে দুটি ভাগে ভাগ করেছে:
- নিঃস্বার্থ মানুষ – যারা ভালো কাজ করে চুপচাপ।
- স্বার্থপর মানুষ – যারা সব সময় নিজের লাভ খোঁজে।
এই দ্বিমুখী বাস্তবতা সমাজের প্রতিদিনের ঘটনা। ভালো মানুষও কখনও কখনও স্বার্থপরদের চাপে থেমে যেতে বাধ্য হয়।
স্বার্থান্বেষী মানুষ:সময়ের সাথে সম্পর্কের পরিবর্তন
“এমনি করে যায় পেরিয়ে মাসের পরে বছর, একটা সময় বাঁধন ছেড়ে হয়ে যায়রে পর।”
এই পংক্তিতে কবি সময়ের সাথে সম্পর্কের অবক্ষয়কে তুলে ধরেছেন। এক সময় যেসব সম্পর্ক খুব ঘনিষ্ঠ ছিল, স্বার্থ ফুরালে সেগুলো একেবারে অচেনা হয়ে যায়। এই বাস্তবতা সবাইকেই একবার না একবার অনুভব করতে হয়।
রঙিন ফানুসের মতো মানুষ
“নিজ খেয়ালে উড়ায় সবাই মনের রঙিন ফানুস।”
এই লাইনটি মানুষের স্বপ্ন ও কল্পনার জগৎকে বোঝায়। মানুষ নিজের ইচ্ছা আর স্বপ্নের পেছনে ছুটতে ছুটতে মানবিক মূল্যবোধ হারিয়ে ফেলে। ফলে একে অপরের উপর নির্ভরতা ও আস্থা কমে যায়।
সৃষ্টির সেরা জীব
মানুষ সৃষ্টিকর্তার শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি হলেও, বর্তমান সমাজে স্বার্থান্বেষী মানুষদের আধিপত্য স্পষ্টভাবে পরিলক্ষিত হয়
মানব আশরাফুল মাখলুকাত।কিন্তু বর্তমান সমাজে মানুষে মানুষে এতো কোলাহল যা দেখে মনে হয় না মানুষ সৃষ্টি সেরা।
মানব কারো ভালো দেখতে পারে না,সামনা সামনি ভালো সাজার অভিনয় করলেও পিছনে বসে কিভাবে অন্যের খারাপ করবে সেই চিন্তায় মগ্ন থাকে।
কখনো যদি কারো উপকার কর তারপর যদি কোন একটা কারণে ক্ষতি হয়ে বসে তখন পিছনের সব কথা ভুলে তোমাকে দোষারোপ করবে।এইটাই হল সৃষ্টির সেরা জীবের বৈশিষ্ট্য।
কবিতায় চিত্রায়িত হয়েছে এমন এক জাতির কথা, যারা নিজের স্বার্থ চরিতার্থ করতে গিয়ে সম্পর্কের বাঁধন ছিঁড়ে দেয়।
তারা কখনো স্বজনপ্রীতির নামে, কখনো আবার পরনিন্দা কিংবা কুৎসা রটনার মাধ্যমে সমাজকে বিভ্রান্ত করে।
উপসংহার
স্বার্থান্বেষী মানুষ কবিতা একটি সামাজিক দিকনির্দেশনা। এখানে মানুষ নামক জীবটির দ্বৈততা, ভণ্ডামি, এবং আত্মমুখীনতা তুলে ধরা হয়েছে।
এই কবিতা আমাদের শেখায়, যদি আমরা নিজেদের ভুল বুঝে পরিবর্তন করতে পারি, তবেই সত্যিকারের মানুষ হওয়া সম্ভব।
এটি এক বাস্তব আয়না, যেখানে সমাজের চেহারা স্পষ্টভাবে ধরা পড়ে। কবি বোঝাতে চেয়েছেন, সম্পর্ক ক্ষণস্থায়ী হতে পারে কিন্তু মানবিক মূল্যবোধ চিরস্থায়ী হওয়া উচিত। আত্মসমালোচনা ও সচেতনতা এই কবিতার মূল বার্তা।
পাঠকের জন্য বার্তা
এই কবিতা আমাদের আত্মসমালোচনার সুযোগ করে দেয়। আমরা যদি সত্যিকার অর্থে মানুষ হতে চাই, তবে আমাদের স্বার্থপরতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। মানবিক গুণাবলিই একজন মানুষকে প্রকৃত মানুষ করে তোলে। ভালোবাসা, সহানুভূতি ও নিরপেক্ষতা থাকলেই সমাজ সুন্দর হয়।
সৃজনশীলতা
ভালোবাসার বিচ্ছেদ | বিচ্ছেদের বুকে জমে থাকা ভালোবাসা

বিদায়ের আলোছায়া
তামান্না রহমান
(ভালোবাসার বিচ্ছেদ)
আছো কেমন?
দিব্যি ভালো!
নতুন করে স্বপ্ন দেখ?
দেখার মতো নেই যে আলো!
তোমার আলো কোথায় হারালো?
অন্ধ করে যে পালালো।
আমায় কেনো ভুল বুঝলে?
তুমি কি নিভুল ছিলে?
ভুলত আমার অল্প ছিল!
হুম..মিথ্যা প্রেমের গল্প ছিল।
বাসতাম তোমায় সত্যি ভালো!
তাই বুঝি ফেলে পালালে?
বেকার মানুষ তাই তো তখন;
আর থাক বলতে হবে না এখন।
সত্যি তোমায় বেসেছিলাম ভালো
বেকার বলে ছাড়তে হল?
আমি ছিলাম নিরূপায়!
ছেড়ে দিয়ে পেয়েছ তো উপায়?
সে সব কথা থাকনা পড়ে;
হুম..ধূলোপড়া পুরনো চ্যাপ্টারে।
সংসার জীবন কেমন চলে?
তুমি যেমন চেয়েছিলে।
বড্ড পরিবর্তন তোমার মাঝে;
তোমার জীবন কেমন চলে?
আছি ভালো সব মিলিয়ে!
সেটাই তো থাকার কথা।
হা হা ভালো থাকি চাওনা বুঝি?
চাওয়ার মতো কি বা বুঝি?
অনেক কিছু বুঝতে তখন।
সেই তখনটা নেই তো এখন।
আমার কথা মনে পড়ে?
আচ্ছা আমি এখন আসি!
সংসার নিয়ে ব্যস্ত বুঝি?
এসব শুনার কি প্রয়োজন?
আচ্ছা তুমি থাকো ভালো।
বিদায় বেলায়ও বলে ছিলে।
চাই তো ভিষণ ভালো থাকো!
তাই তো আজ এমন হলো।
নিজের প্রতি খেয়াল রেখো!
মেয়ের স্কুল ছুটি হল।
তাহলে এখন যাচ্ছো চলে।
আজীবনের জন্য তো ছেড়ে ছিলে।।
ছাড়তে চাইনি তখন আমি!
মিথ্যা আজও বলছ তুমি।
পারলে আমায় ক্ষমা করো!
বিধাতার কাছে চেয়ে নিও।।।
কবিতার মূলভাব:ভালোবাসার স্মৃতি ও বিচ্ছেদ এর কবিতা
১. ভালোবাসার স্মৃতি ও বিচ্ছেদ
ভালোবাসার স্মৃতি ও বিচ্ছেদ জীবনের এক চিরন্তন গল্প। কিছু ভালোবাসা রয়ে যায় শুধু হৃদয়ের কোণে। কিছু সম্পর্ক মুছে গেলেও তার ছায়া পড়ে থাকে মনে। এই কবিতায় সেই হারানো ভালোবাসা ও তার ভাঙনের যন্ত্রণা উঠে এসেছে এক নিঃশব্দ কথোপকথনের মাধ্যমে।
২. অর্থনৈতিক বাস্তবতা ও হারিয়ে যাওয়া সম্পর্ক
প্রেমিক বলে—সে সত্যিই ভালোবাসত, কিন্তু বেকারত্বের কারণে সে সম্পর্ক ধরে রাখতে পারেনি। সম্পর্কের মাঝে তখন দারিদ্র্য ছিল, সঙ্গী ছিল না স্থিরতা। প্রিয়জন তাকে ছেড়ে চলে যায়, আর সেই ক্ষত রয়ে যায় চিরকাল।
৩. অতীত ভালোবাসার স্মৃতি আর বর্তমান জীবনের ব্যবধান
প্রেমিকা এখন সংসার নিয়ে ব্যস্ত। তার জীবনে এসেছে পরিবর্তন। কথক দেখে—তাকে ছাড়া সবকিছু চলেছে ঠিকঠাক। অথচ তার নিজের মধ্যে রয়ে গেছে অতীতের ছায়া, পুরনো স্মৃতির ধুলো পড়া পাতাগুলো।
৪. বিদায় ও ক্ষমার বার্তা এবং ভালোবাসার বিচ্ছেদ
শেষে কবিতার কথক একটি নরম বিদায়ের সুরে কথা বলে। সে জানায়, সে ভুল বোঝেনি, বরং আজও ভালোবাসে। ক্ষমা চায়—যদি কোনোদিন কষ্ট দিয়ে থাকে। বিদায় জানিয়ে বলে, “নিজের প্রতি খেয়াল রেখো”, ঠিক যেমন ভালোবাসার শেষ ইচ্ছা হয়।আজীবনের জন্য দুটি মানুষ আলাদা আলাদা পথ বেঁকে গেল।শুধু হৃদয়ে রয়ে গেল ভালোবাসার স্মৃতি ও বিচ্ছেদ এর যন্ত্রণা।
শেষ কথা
ভালোবাসার স্মৃতি কখনও পুরনো হয় না,তা সময়ের গহীনে স্নিগ্ধ আলোর মতো জ্বলতে থাকে।সেই মধুর মুহূর্তগুলিই হয়ে ওঠে একাকীত্বের অবলম্বন,যখন বিচ্ছেদের ব্যথা চেপে বসে বুকের গভীরে।
ভালোবাসা হারিয়ে গেলেও তার ছায়া রয়ে যায় হৃদয়ের আঙিনায়,প্রতিটি নিশ্বাসে, প্রতিটি নির্জনতায়।
বিচ্ছেদ আমাদের কাঁদায়, ভেঙে দেয়, কিন্তু শেখায় —
ভালোবাসা কখনো মুছে যায় না, বদলে যায় শুধু তার রূপ।
শেষ পর্যন্ত, স্মৃতিই হয়ে থাকে ভালোবাসার সবচেয়ে সুন্দর আশ্রয়।
সৃজনশীলতা
বাঙালির বৈশাখ: প্রাণের উৎসব ও সংস্কৃতির রঙে রাঙানো ঋতু

বৈশাখের আগুন
মিজানুর রহমান
বৈশাখ, তুমি ঝড়ের হাওয়া, আগুনের ফুলকি,
মাটির বুকে জাগিয়ে দাও জীবনের ধুকপুকি।
শিমুল-পলাশ রাঙা হয়ে ফোটে তোমার ডাকে,
গ্রামের পথে হিল্লোলে মাতে নতুন সুরের বাঁকে।
হাওরে দোলে নৌকার মাঝি, গায় বাউলের গান,
বৈশাখ, তুমি বাঙালির বুকে, নতুন প্রাণের প্রাণ।
মঙ্গল শোভায় মেতে ওঠে গাঁয়ের হাটবাজার,
মেলার ধুলোয় মিশে যায় হাসি, নাচে রঙিন ষাড়।
হালখাতার পাতায় লেখা নতুন দিনের হিসাব,
বৈশাখ, তুমি জাগাও মনে অপার সম্ভাব।
গ্রীষ্মের তাপে পুড়লেও মন, তুমি দাও ছায়ার সুখ,
কৃষকের ঘামে, কবির কলমে, জন্ম নেয় নতুন রুপ।
বৈশাখ তুমি চির জাগ্রত, তুমি প্রাণের ঢেউ,
বাঙালির রক্তে বয়ে চলো তুমি, বাঁধা দিবে না কেউ।
এসো তবে, নতুন বছরে আলোর ডাক নিয়ে,
বৈশাখ, তুমি ছড়িয়ে দাও প্রেম, শান্তির পরশ দিয়ে।
তোমার রোদে, তোমার ছায়ায়, ফুটুক ফুলের হাসি,
বাংলার মাটি, বাংলার মানুষ, থাকুক চির উচ্ছ্বাসী।
কবিতার মূলভাবঃ
ভূমিকা: বৈশাখের আবাহন
বৈশাখ বাঙালির জীবনে এক নতুন সূর্যোদয়ের নাম। এই কবিতায় বৈশাখকে প্রাণের প্রতীক হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে।
ঝড়, আগুন, ফুলকি, আর নতুন আশার বার্তায় বৈশাখ বাঙালির মনে সৃষ্টি করে প্রাণচাঞ্চল্য।
প্রকৃতির রূপে বৈশাখ
শিমুল-পলাশের রাঙা রঙে ফুটে ওঠে বৈশাখের রূপ। গ্রামের পথে হাওয়ার ঝাপটায় সুরের ঢেউ নামে।
বৈশাখ যেন প্রকৃতির ক্যানভাসে এক অদ্ভুত রঙের ছোঁয়া দেয়। বাউল গানের সুরে, নৌকার দোলায় বাঙালি ফিরে পায় তার শিকড়ের টান।
মেলা ও উৎসবের প্রাণবন্ততা
বৈশাখ মানেই উৎসব। গাঁয়ের হাটবাজারে মঙ্গল শোভাযাত্রা আর ষাঁড় নাচে আনন্দের জোয়ার বইয়ে দেয়।
মেলামেশায় মিলিয়ে যায় শহর-গ্রামের ভেদাভেদ। মানুষের মুখে হাসি, পায়ে নাচ। বৈশাখ আসে শান্তি আর আনন্দের আহ্বান নিয়ে।
নতুন বছরের নতুন সূচনা
হালখাতা খুলে নতুন দিনের হিসাব শুরু হয় বৈশাখে। পুরনো ভুল আর ক্লান্তিকে সরিয়ে জীবন পায় নতুন দিশা। বৈশাখ বাঙালির মনে সম্ভাবনার আলো জ্বেলে দেয়।
কৃষক ও কবির চোখে বৈশাখ
প্রচণ্ড গ্রীষ্মেও বৈশাখ দেয় ছায়ার স্বস্তি। কৃষকের ঘামে জন্ম নেয় সোনালী ফসল। কবির কলমে উঠে আসে নবজাগরণের ভাষা। বৈশাখ শুধু ঋতু নয়, বৈশাখ হলো সৃষ্টির স্পন্দন।
বাঙালির চেতনায় বৈশাখ
বৈশাখ বাঙালির রক্তে গাঁথা। সে চির জাগ্রত, চির নবীন। তাকে কেউ রুখে রাখতে পারে না। সে আসে বারবার, ভালোবাসা আর শান্তির বার্তা নিয়ে।
উপসংহার: বৈশাখ মানেই ভালোবাসা
শেষে কবি আহ্বান করেন, বৈশাখ যেন ছড়িয়ে দেয় প্রেম ও শান্তির পরশ। তার রোদে ফুটুক নতুন সম্ভাবনার ফুল। বাংলার মাটি আর মানুষ থাকুক চির উচ্ছ্বাসী, বৈশাখের মতোই নবীন ও চিরসবুজ।
-
কবিতার রাজ্য2 months ago
সময় বড্ড দামী- দেওয়া মানেই কি ভালোবাসার গুরুত্ব?
-
কবিতার রাজ্য2 months ago
“অবিচ্ছিন্ন ভালোবাসা: সম্পর্কের এক অনন্য দার্শনিকতা”
-
সৃজনশীলতা2 months ago
নিখোঁজ ভালোবাসা – একাকিত্বের আধুনিক অভিধান
-
রোমান্টিক সাহিত্য2 months ago
“রাগ ও ভালোবাসার দ্বন্দ্ব: একটি আত্মনিবেদিত প্রেমের পদ্য”
-
অনুপ্রেরণার কবিতা2 months ago
একদিন এসো সময় করে – প্রেমের অপেক্ষার কবিতা
-
সৃজনশীলতা2 months ago
হৃদয়স্পর্শী বাংলা কবিতা | স্মৃতির অনামিকা ধরে এক প্রেমযাত্রা
-
সৃজনশীলতা2 months ago
ভালোবাসার বিনিময়ে হৃদয় | একটুকরো অকৃত্রিম ভালোবাসার সন্ধানে
-
অনুপ্রেরণার কবিতা2 months ago
ভালোবাসার চোখে কবিতার জন্ম হয় | প্রেম চির স্বগীয় সুখ