Connect with us

কবিতার রাজ্য

“অবিচ্ছিন্ন ভালোবাসা: সম্পর্কের এক অনন্য দার্শনিকতা”

Published

on

মৃত্যুর-পরে-ভালোবাসা

“বিশ্বাসের ভালোবাসা”

তামান্না রহমান

 

(অবিচ্ছিন্ন ভালোবাসা)

তুমি আমাকে এমন ভাবেই ভালোবেসো,
যাতে পৃথিবীর সমস্ত বদনাম

আমার শরীরে লাগানো হলেও

আমার প্রতি বিশ্বাস তোমার বিন্দুমাত্র কমবে না।

তুমি আমাকে এমন ভাবেই ভালোবেসো,
পৃথিবীর সব লোক আমাকে

ছেড়ে গেলেও তুমি আমাকে কখনো ছেড়ে যাবে না,

বাবা-মা যেমনটি করে তার সন্তানের

সব দোষ,গুণ,ভালো,মন্দ জানার পরেও

আজীবন আগলে রাখে কখনো ছেড়ে যায় না

তুমিও আমাকে তেমনি ভাবে আগলে রেখো

যাতে কোনো বিপদ আমাকে স্পর্শ করতে না পারে।

তুমি আমাকে এমন ভাবেই ভালোবেসো,
যাতে আমার হৃদয়ে প্রতিটি অনুভূতি,সুখ,দুঃখ,আনন্দ,বেদনা,শখ বা চাহিদা যাই বল না কেন মুখ ফুটে বলতে যাতে কখনো দ্বিধা বোধ না হয়।
হৃদয়ে অতি গোপন কথায় যেন

তোমাকে না বলা অব্ধি

চোখের পাতা এক করা না যায়।

তুমি আমাকে এমন ভাবেই ভালোবেসো,
যাতে তোমাকে ভালোবাসার পরে

অন্য কোনো পুরুষ এর প্রতি মায়া না জন্মায়,

তোমাকে ঘিরেই যেন থাকে আমার সমস্ত পৃথিবী।

কার ছায়া যেন আমাদের এই পৃথিবী উপর না পড়ে।

তুমি আমাকে এমন ভাবেই ভালোবেসো,
যাতে আমাকে ভালোবাসার পরে

তোমার আর অন্য কার প্রতি ভালোবাসা না জন্মায়,

তোমার চোখ জোড়া অন্য কোনো নারীকে যেন না স্পর্শ করতে পারে।আমার প্রতি তোমার মাদক এর মতো যেন আসক্তি থাকে এক জীবনের পরে অন্য জীবনে।

তুমি আমাকে এমন ভাবেই ভালোবেসো,
চলে গেলে বাঁচার প্রেরণা হারিয়ে তুমি আমাকেই খুঁজেবে,

আমাকে ঘিরেই থাকবে তোমার সমস্ত চাওয়া পাওয়া।

অন্য জীবনে খোদার কাছে আমাকে চাইবে।

তুমি আমাকে এমন ভাবেই ভালোবেসো,
যে তোমার দেহ,মন,প্রাণ জুড়ে যেন

আমি ছাড়া দ্বিতীয় কেউ না থাকে।

আগলে রেখ আমৃত্যু বুকের “বা-পাশে”।



অবিচ্ছিন্ন ভালোবাসার গাঁথা: হৃদয়ের গভীরে এক অনন্য আবেগ


ভূমিকা: ভালোবাসার শুদ্ধতম সংজ্ঞা

“তুমি আমাকে এমন ভাবেই ভালোবেসো…”—এই কবিতাটি শুরু হয় সরল অথচ গভীর আবেগপূর্ণ আহ্বান দিয়ে যা মানব হৃদয়ের সবচেয়ে পবিত্র ও জটিল অনুভূতি ‘ভালোবাসা’কে সংজ্ঞায়িত করে নতুনভাবে।এখানে ভালোবাসার একটি আদর্শ রূপে কবি কল্পনা করেছেন,যেখানে বিশ্বাস, নিষ্ঠা ও আত্মসমর্পণের মেলবন্ধন ঘটেছে।

এই অবিচ্ছিন্ন ভালোবাসা কবিতাটি কেবলমাত্র রোমান্টিক সম্পর্কের কথাই বলে না, এটি বরং মানবিক বন্ধনের সার্বজনীন রূপকে ধারণ করে—যেখানে প্রেমিক-প্রেমিকা, পিতা-মাতা-সন্তান,এমনকি ভক্তের ও ঈশ্বরের সম্পর্কও অনুরণিত হয়।


কবিতার গঠনশৈলী ও স্তবকভিত্তিক বিশ্লেষণ

এই কবিতাটি সাতটি স্তবকে বিন্যস্ত যেখানে প্রতিটি স্তবকে ভালোবাসার নতুন নতুন মাত্রা উন্মোচন করে: 

 ১. বিশ্বাসের অটল ভিত্তি

“পৃথিবীর সমস্ত বদনাম আমার শরীরে লাগানো হলেও…” 

– পৃথিবীর সমস্ত বদনাম সত্ত্বেও প্রিয়জনের প্রতি অটুট বিশ্বাস।
-বিশ্বাস ও মানসিক স্থিতি একটি সম্পর্ককে গভীর করে তোলে।

২. পারিবারিক ভালোবাসার আদলে

“বাবা-মা যেমনটি করে তার সন্তানের…” 

–  কবি এখানে ভালোবাসাকে পরিবারের মতোই অপরিহার্য বন্ধনের স্তরে উন্নীত করেছেন,যা কোনো অবস্থাতেই ছিন্ন হয় না।

৩. আবেগের সম্পূর্ণ স্বাধীনতা

“হৃদয়ের গোপন কথায় যেন তোমাকে না বলা অবধি…” 

-যারা নিজের আবেগ স্বচ্ছভাবে প্রকাশ করতে পারেন, তাদের সম্পর্কে সন্তুষ্টি বেশি এবং দ্বন্দ্ব কম হয়।

৪-৫.একনিষ্ঠতা ও আসক্তি

“তোমাকে ঘিরেই যেন থাকে আমার সমস্ত পৃথিবী…”

– শুধুমাত্র একজনকেই কেন্দ্র করে আবর্তিত পৃথিবী।”ভালোবাসার একচেটিয়া রূপ” সমকালীন সমাজে বিরল।

৬-৭. অনন্ত ভালোবাসার প্রত্যাশা

“চলে গেলে বাঁচার প্রেরণা হারিয়ে…”

– কবি মৃত্যুঞ্জয়ী শক্তি হিসেবে ভালোবাসাকে দেখেছেন।

-কবির চোখে ভালোবাসা এক মৃত্যুঞ্জয়ী শক্তি(অমর, সর্বব্যাপী),যাসময়, যুদ্ধ, এমনকি মৃত্যুকেও জয় করতে সক্ষম।


আধুনিক সম্পর্কের সাথে সংঘাত

কবিতার বার্তা সমসাময়িক কালচার (টিন্ডা)-এর যেন এক বিপরীতমুখী ধারা। কবিতার মূল বক্তব্য আজও প্রাসঙ্গিক


পূর্ব ও পাশ্চাত্যের দর্শনের সমন্বয়

-রাধা-কৃষ্ণের প্রেম:-কৃষ্ণের প্রেম শুধু এক ধর্মীয় আখ্যান নয়, বরং বৈষ্ণব কবিতায় একনিষ্ঠতার আধ্যাত্মিক প্রতীক।যা এই কবিতার একনিষ্ঠতার ধারণা বৈষ্ণব সাহিত্যের অনুরণন বহন করে।
“প্রেম তোমাকে উচ্চতায় তুলবে, কিন্তু একই সঙ্গে শূলেও বিদ্ধ করবে।””—এই দ্বৈততা কবিতায় অন্তর্নিহিত।

আধুনিক বাংলা কবিতার ধারায় অবস্থান

– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর:”তুমি যে আমারে ভালোবাসো, সে কি কভু শেষ হবে?”—এই কবিতার মতোই এখানে ভালোবাসার অনন্ততা ফুটে উঠেছে।

– জীবনানন্দ দাশ: “আবার আসিব ফিরে”-এর মেলাঙ্কোলিয়ার বিপরীতে এই কবিতা আশাবাদী ও আবেগপ্রবণ।
-সমরেশ মজুমদার:সমরেশ মজুমদারের গদ্যের মতোই গভীর মানবিক আবেদন।


সমাজবিজ্ঞানের আলোকে পাঠ

ডিজিটাল যুগে সম্পর্কের সংকট

– সোশ্যাল মিডিয়ার অতিরিক্ত ব্যবহার সম্পর্কের মানসিক স্বাস্থ্য ও সন্তুষ্টিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে,যার ফলে সম্পর্কের স্থায়িত্ব কমে গেছে।


পাঠকের জন্য চিন্তার খোরাক

১.. কবিতায় বর্ণিত ভালোবাসা কি আদৌ বাস্তবসম্মত, নাকি কাব্যিক কল্পনা?
২). ডিজিটাল যুগে এই ধরনের গভীর সম্পর্ক গড়ে তোলা কি সম্ভব?


সমাপ্তি: ভালোবাসার অনন্ত যাত্রা

এই অবিচ্ছিন্ন ভালোবাসা কবিতা শুধুই শব্দের সমাহার নয়, এটি আসলে হৃদয়ের গভীরতম আকুতি। ভালোবাসাকে কীভাবে আমরা সংজ্ঞায়িত করি আমাদের বিশ্বাস, নিষ্ঠা ও আবেগের গভীরতার উপর নির্ভর করে।
“ভালোবাসা কখনোই শুধু মাত্র অনুভূতি নয়, এটি একটি প্রতিজ্ঞা—যেখানে দু’টি মানুষ একে অপরের অন্ধকারে আলো হয়ে ওঠে”।
“ভালোবাসা কখনোই সহজ নয়,কিন্তু এর সত্যিকারের স্বাদ পেতে হলে,আমাদের ঠিক এভাবেই ভালোবাসতে শিখতে হবে —নিঃশর্তভাবে, নির্ভয়ে।


📌 ডিসক্লেইমার:এই বিশ্লেষণে উপস্থাপিত সকল তথ্য ও মতামত শুধুমাত্র শিক্ষামূলক ও আলোচনামূলক উদ্দেশ্যে প্রদান করা হয়েছে। লেখকের ব্যক্তিগত গবেষণা ও বিশ্লেষণের ভিত্তিতে রচিত এই কন্টেন্ট কোনো প্রকার পেশাদার চিকিৎসা, মনস্তাত্ত্বিক বা আইনি পরামর্শের বিকল্প নয়।অনুমতি ছাড়া এই কন্টেন এর কোন অংশ কপি করা আইনত দণ্ডনীয়।

কবিতার রাজ্য

রবের প্রতি ভালোবাসা – ইসলামিক হৃদয়স্পর্শী কবিতা

Published

on

রবের-প্রতি-ভালোবাসা-pc

রবের প্রতি ভালোবাসা

তামান্না রহমান 

 

আকস্মিক আঁধারে যখন অন্তর ব্যথিত,
তখনই হৃদয় হয়ে উঠে তাওহীদের শুদ্ধ আর্তনাদে বিহ্বলিত।
রব! তুমি আছো অপার মহিমার অদৃশ্য ক্যানভাসে,
তোমার রাহমতে সিক্ত হয় নিঃশেষ জীবনের পঙ্কিল প্রাসাদ।

তোমার জিকিরে উঠে মরমি কম্পন,
তাওবার অশ্রু ঝরে অন্তরের গোপন ক্রন্দনে অনুরণন।
দুনিয়ার মোহে বিভ্রান্ত আমি,
তবুও ফিরি তোমার দরবারে, নিঃস্ব হয়ে তোমার করুণায় মগ্ন থাকি।

তুমি মালিকুল মুলক, আরশে আজিমের অধিপতি,
তোমার ইশারায় সৃষ্টির পদক্ষেপ — অনন্ত গতি।
প্রেম তব উর্ধ্ব, শাশ্বত, সীমাহীন,
তোমার ছায়ায় তলিয়ে যায় সব মানবিক পাপের চিন।

হাশরের দিনে যখন মুখর হবে জমিন,
তুমি দান করো নাজাত, তোমার রহমতই হবে একমাত্র চিন।
সেজদায় যে অশ্রু গড়িয়ে পড়ে তোমার নামে,
তাই হয় মহৎ প্রেম — বর্ণিল আখিরাতের সুগন্ধি বীজ বপনে।

রব! তোমার ভালোবাসাই পরম মুক্তির পথ,
জীবনের ক্ষণস্থায়ী রঙিন আঘাতে তোমার ধৈর্য দেয় শান্তির মোহ।
ভয় নয়, ভালোবাসাই তাওহীদের প্রকৃত শিক্ষা,
যেখানে প্রেমে আর বন্দেগিতে মেলে আত্মার মুক্তি ও পরিশুদ্ধ দীক্ষা।


রবের প্রতি ভালোবাসা: আল্লাহর প্রেমে আত্মশুদ্ধির পথের গভীর অনুসন্ধান


আল্লাহর প্রেমে ডুবে যেতে গেলে পৃথিবীর মোহ ছেড়ে, একমাত্র হৃদয়ের প্রকৃত প্রেমের পথে যাওয়া দরকার


মূলভাব :

এই কবিতায় রবের (আল্লাহর) প্রতি গভীর ভালোবাসা, ভক্তি, ভয় ও মায়ার মিশ্রণে মানুষের আত্মিক জাগরণ এবং দুনিয়ার মোহ থেকে আল্লাহর করুণায় ফিরে আসার প্রতিচ্ছবি আঁকা হয়েছে।

কবিতাটি ঈমানদার হৃদয়কে ইলহাম দেবে আত্মশুদ্ধি ও রবের সান্নিধ্যের দিকে।এটা “রবের প্রতি ভালোবাসা” কে কেন্দ্র করে, যা একটি গভীর আত্মিক যাত্রার রূপক হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে।

রবের প্রতি একজন মুমিনের প্রেমের সত্যিকার শক্তি, শক্তিশালী আত্মশুদ্ধি এবং আখিরাতে মুক্তির এক অমর পথ হিসেবে বিশ্লেষণ করা হয়েছে।


রবের প্রতি ভালোবাসা: একজন মুমিনের হৃদয়ের অমর যাত্রা

আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা এবং তাওহীদের গভীর শিক্ষা মুমিনকে শুধু যে জীবন পথে সঠিক দিকনির্দেশনা দেয় তা নয়,

বরং তাঁর অন্তরে পূর্ণতা এবং শান্তির অনুভূতি সঞ্চারিত করে।এটা এমন এক পথ, যেখানে আত্মার শুদ্ধি, হৃদয়ের প্রশান্তি এবং চিরন্তন মুক্তির দেখা মেলে।


তাওহীদের আলোয় রবের প্রতি ভালোবাসা: একত্ববাদে আত্মার মুক্তি

তাওহীদ শুধুমাত্র আল্লাহর একত্ববাদ মানে নয়, বরং একটি পরিপূর্ণ জীবন দর্শন।

যে মুহূর্তে আমরা আল্লাহর একত্ব গ্রহণ করি, তখনই অন্তরে বাসা বাঁধে অটুট বিশ্বাস এবং তাঁর প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা।

এই ভালোবাসা আমাদের আত্মাকে এক নতুন আলোয় আলোকিত করে এবং দুনিয়ার সব মোহ থেকে মুক্তি দেয়।

“তোমরা আল্লাহর প্রেমের সাথে তাঁর জিকির করো, তাতে তোমরা শান্তি পাবে, আর তাতে তোমরা পাবো তোমার রবের সান্নিধ্য।”

এটি হলো তাওহীদের পূর্ণতা, এবং এই প্রেমই আমাদের অন্তরকে শুদ্ধ এবং প্রশান্ত রাখে।


রবের প্রতি ভালোবাসা: শুদ্ধ প্রেমের একটি দৃষ্টান্ত

আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা একজন মুমিনের জন্য অপরিসীম।

একদিকে যেমন দুনিয়ার সকল কষ্ট, বিপদ, এবং প্রতিকূলতার মাঝে আল্লাহর উপর ভালোবাসার শেকড় মজবুত হতে থাকে,

অন্যদিকে তেমনিভাবে অশেষ রহমত এবং দয়া দিয়ে আল্লাহ বান্দাকে তাঁর অনুগ্রহের ছায়ায় আচ্ছাদিত করেন।

“যে তার রবকে হৃদয়ের গভীরে ভালোবাসে, সে কখনো হারায় না, তার হৃদয়ে চিরকাল থাকে আল্লাহর প্রেমের চিহ্ন।”

এটাই হলো এক পরিপূর্ণ আত্মার পরিচয়, যেখানে শুধু আল্লাহর জন্য ভালোবাসা,

তাঁর জন্য কৃতজ্ঞতা, এবং তাঁর শরণাপন্ন হওয়া পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে।


রবের প্রেম বনাম দুনিয়ার প্রেম: এক অনন্ত প্রেমের সম্পর্ক

যে প্রেম দুনিয়ার মাঝে আমরা অনুভব করি তা এক মুহূর্তের, তবে রবের প্রেম চিরন্তন। এই প্রেম ক্ষণস্থায়ী নয়, বরং এটি আল্লাহর অশেষ করুণা এবং রহমতের একটি অমর দৃষ্টান্ত।

দুনিয়ায় প্রেম নিঃস্বার্থ নয়, তবে রবের প্রেম হলো অমর, সীমাহীন, এবং পরিপূর্ণ।এই প্রেমের মাঝে ভিন্নতা রয়েছে, যেখানে দুনিয়ার প্রেমে আসলে কিছু প্রত্যাশা ও শর্ত থাকে,

কিন্তু রবের প্রেমে কোনো শর্ত থাকে না, শুধু খাঁটি ভালোবাসা থাকে।


রবের প্রতি ভালোবাসা: সেজদা, কান্না এবং আত্মশুদ্ধির পথে এক অমূল্য অভিজ্ঞতা

রবের প্রতি ভালোবাসা নিছক একটি অনুভূতি নয়, এটি এক গভীর প্রার্থনা, এক অনন্ত আত্মিক কান্না এবং সেজদায় নিজের দাসত্বের পূর্ণ উপলব্ধি।

সেজদা করার মাধ্যমে একজন মুমিন জানায় যে তার হৃদয়ে আল্লাহর প্রতি প্রেম সর্বোচ্চ স্থান অধিকার করেছে,

সেখানে আর কোনো বস্তু বা মানুষ আসতে পারে না।

“তোমার সেজদার অশ্রু আল্লাহর কাছে পৌঁছে, আর আল্লাহ তোমাকে তাঁর বিশেষ রহমত দিয়ে পুরস্কৃত করেন।”

এটাই সম্পর্কের পবিত্র দৃষ্টান্ত, যেখানে প্রতিটি সেজদায় আল্লাহর প্রতি প্রেম এবং শ্রদ্ধা প্রকাশিত হয়।আল্লাহর কাছে চাওয়া-করা,

কান্না, এবং নিজের ভুল স্বীকার করা—এ সবই আল্লাহর কাছে একটি অমূল্য উপহার হিসেবে গৃহীত হয়।


আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা: একটি স্নিগ্ধ, শান্তিপূর্ণ সঠিক পথ

আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা যখন প্রবাহিত হয়, তখন জীবন হয়ে ওঠে সুগম।

সেই ব্যক্তি দুনিয়ার প্রতি কিছুই প্রত্যাশা করে না, বরং তার একমাত্র লক্ষ্য থাকে—আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন।

জীবনকে তিনি এমনভাবে গ্রহণ করেন, যেখানে প্রতি ধাপে আল্লাহর বাণী ও নির্দেশনা অনুসরণ করা হয়।

  • রবের প্রতি ভালোবাসা:
    • আত্নশুদ্ধির এক মহান মাধ্যম
    • দুনিয়ার থেকে উচ্চতর স্থিরতা অর্জন
    • আখিরাতের মুক্তি এবং জান্নাতের প্রতি নিশ্চিত পন্থা

যিনি আল্লাহকে নিজের জীবনে সবচেয়ে প্রিয় বানায়, তার জীবনে কোনো ভয় থাকে না, কারণ তার সব কিছু আল্লাহর হাতে থাকে এবং আল্লাহ তাঁকে কখনো একা রাখেন না।


হাশরের দিনে আল্লাহর রহমত: রবের ভালোবাসার পরিপূর্ণ প্রতিফলন

আখিরাতের দিন যখন সবার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে হিসাব হবে, তখন শুধু সেই ব্যক্তি সফল হবে, যে দুনিয়াতে আল্লাহকে ভালোবাসত, আল্লাহর পথে চলত এবং সেজদায় আত্মসমর্পণ করত।রবের প্রেমই তাকে চিরকালীন মুক্তির পথে নিয়ে যাবে, যেখানে আর কোনো ভয় থাকবে না।

“তারা যারা তাদের দুঃখ, কষ্ট এবং সংকটের মুহূর্তে রবের কাছে ফিরে আসে, তারা জান্নাতের সুখ লাভ করবে, কারণ তাদের হৃদয়ে আল্লাহর প্রেম ছিল বিশুদ্ধ।”

এই প্রেমের মাধ্যমে আমরা আখিরাতে সত্যিকারের মুক্তি অর্জন করতে পারি। রবের প্রেমে ডুবে থাকাই পরিপূর্ণ সফলতা।


রবের প্রেমে বিশুদ্ধতা: আত্মশুদ্ধির পথে এক স্নিগ্ধ যাত্রা

আল্লাহর প্রতি প্রেম শুধুমাত্র আবেগ নয়, এটি এক গভীর অন্তর্দৃষ্টি ও আত্মশুদ্ধির পথ।

একজন মুমিন যখন প্রকৃত অর্থে আল্লাহকে ভালোবাসে, তখন সে জীবনে প্রতিটি পদক্ষেপ আল্লাহর নির্দেশনা অনুযায়ী পালন করতে শেখে।

মুমিন ব্যক্তি অন্তর থাকে পবিত্র,তারা আল্লাহ ভয়ে সকল পাপাচার থেকে নিজেদের দূরে রেখে আল্লাহ কল বিধিনিষেধ মেনে চলে।


উপসংহার: রবের প্রতি ভালোবাসা—এক অমর অঙ্গীকার

রবের প্রতি ভালোবাসা মানে শুধুমাত্র শব্দ নয়, এটি একটি জীবনযাত্রার অভ্যাস।এটিই একজন মুমিনের বিশ্বাস, তার অন্তরের বিশুদ্ধতা এবং আখিরাতে চিরকালীন মুক্তির প্রতিশ্রুতি।

আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা—এটি জীবনকে সম্পূর্ণ নতুন এক দৃষ্টিকোণ দেয় এবং আমাদের সর্বোচ্চ উদ্দেশ্যকে বাস্তবে পরিণত করে।

প্রকৃত মুমিন সেই যার হৃদয়  আল্লাহ প্রতি ভালোবাসা আছে এবং যে আল্লাহর ভয়ে সকল পাপ থেকে নিজের অন্তর কে পবিত্র রাখে।

Continue Reading

কবিতার রাজ্য

রাত জাগা পাখি: জীবনের নিঃশব্দ ত্যাগ ও জাগরণের প্রতিচ্ছবি

Published

on

রাত-জাগা-পাখি

“রাত জাগা পাখি”

মিজানুর রহমান 

রাত জাগে আল্লাহ’র বান্দা, মুমীন- মুহাদ্দিস্
ইসলামকে কায়েম করতে পড়েন কুরআন-হাদীস।
ভালো কাজের করতে ক্ষতি, মন্দ কাজের দিতে গতি;
দুনিয়ার শান্তি নষ্ট করতে রাত জাগে ইবলিস্।
কতো শত বান্দা-বান্দি রাত জেগে হায়,
ভাসতে চায় পরকালে খোদার মহিমায়।
কবিরাও তো রাত জেগে কবিতার বাকে
মনের মাধুরী দিয়ে স্মৃতির পরশ আঁকে।
প্রেমিকেরা রাত জাগে প্রেমের মরণে
প্রেম মাল্য রেখে যায় স্মৃতির স্মরণে।
রাত জাগে নার্স কতো হসপিটালের ডোড়ায়,
জীবনটাকে বিলিয়ে দিতে রোগীদের সেবায়।
উন্নয়নে অংশ নিতে শিক্ষকরাও রাত জাগে,
ভালো জাতি গড়তে পারলে তাদেরই নাম আগে।
শিক্ষার্থীরা আছে যত সবাই ভালো চায়,
পরীক্ষা এলেই জেগে জেগে রাত কেটে যায়।
সেনাবাহিনী আছে যারা দেশ রক্ষার কাজে,
দেশের শান্তি ফিরিয়ে আনতে তারাও তো রাত জাগে।
এমনি করিয়া হাজারও মানুষের রাত কেটে যায়।
জীবনটা যে অনেক ছোটো কখন কি যে হয়।
“রাত জাগা পাখি” মোরা নিশাচর তো নই;
বৈশিষ্ট্যগুণে সৃষ্টিকুলের সেরাতেই রই।

 


মূলভাব: রাত জাগা পাখির গভীর তাৎপর্য


১. নিঃশব্দে যারা জীবন গড়ে তোলেন

রাত জাগা পাখিরা আমাদের চারপাশেই আছেন। কেউ ইবাদতে, কেউ প্রেমে, কেউ বা দায়িত্ববোধে জেগে থাকেন। তারা আলোর পথে হাঁটেন, অথচ আলো চান না। এই কবিতায় তাদের নিঃশব্দ আত্মত্যাগ ও জাগরণকে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে তুলে ধরা হয়েছে।


২. ধর্মীয় সাধনা ও আত্মিক জাগরণ

মুমিন-মুহাদ্দিসরা রাত জাগেন আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য। কুরআন তিলাওয়াত ও তাহাজ্জুদের নামাজে কাটে তাদের রাত।

কবিতার শুরুতেই এসেছে সেই পবিত্র জাগরণের চিত্র, যেখানে ইবলিসের অশুভ কাজ আর আল্লাহর বান্দার নেক কাজের সংঘর্ষ দেখানো হয়েছে।


৩. প্রেম ও কবিতার অনুভবে রাতের জীবন

রাত জাগে প্রেমিক ও কবিরা। একজন স্মৃতির ব্যথায়, আরেকজন শব্দের মাধুর্যে। কবি তার কলমে প্রেম, যন্ত্রণা, স্মৃতি আর গভীর আবেগের ছোঁয়া দেন। প্রেমিক তার ভালোবাসাকে অমর রাখতে নির্ঘুম রাত কাটান। এই অংশে রাত হয়ে ওঠে অনুভবের ভাষা।

 


৪. দায়িত্ববোধ ও সমাজ গঠনের নিরব সৈনিকরা

নার্সরা হাসপাতালের বেডের পাশে দাঁড়িয়ে জাগেন রোগীর সুস্থতার আশায়। শিক্ষকরা জাতি গঠনের কাজ করেন গভীর রাতে পড়িয়ে।

সেনা সদস্যরা দেশের জন্য সীমান্তে জেগে থাকেন। এইসব পেশাজীবীদের ত্যাগ ছাড়া সমাজ অচল।


৫. স্বপ্নের পথে শিক্ষার্থীর নির্ঘুম লড়াই

ছাত্র-ছাত্রীরা পরীক্ষার প্রস্তুতিতে রাত জাগে। তারা ঘুম না-গিয়ে ভবিষ্যৎ গঠনের স্বপ্ন বুনে। কবিতায় এই চিত্রও বাস্তবভাবে ফুটে উঠেছে।

এভাবে কবি আমাদের বুঝিয়ে দেন—রাত শুধু ঘুমের নয়, বরং এক ধরণের জাগরণের সময়, যেখানে ভবিষ্যৎ বোনা হয় নিঃশব্দে।


৬. নিশাচর নয়, সৃষ্টির সেরা জাতি

শেষে কবি বলেন, আমরা নিশাচর নই। আমরা সৃষ্টির সেরা জাতি—যারা স্বপ্ন, বিশ্বাস ও দায়িত্ববোধ নিয়ে রাতকে অর্থবহ করে তুলি।

এই “রাত জাগা পাখি”রাই সভ্যতার বাতি জ্বালিয়ে রাখেন। তাদের ত্যাগ, ধৈর্য, ভালোবাসা এবং বিশ্বাস আমাদের এগিয়ে নিয়ে যায়।

এই গভীর উপলব্ধিই “রাত জাগা পাখি” কবিতার সারমর্ম।


উপসংহার:
রাত জাগা মানে শুধু চোখে ঘুম না থাকা নয়। এটি এক নিরব সংগ্রাম, আত্মত্যাগ ও জাগরণের নাম। যারা রাত জাগেন, তারাই আমাদের ভোর এনে দেন।

এই কবিতার মধ্য দিয়ে কবি আমাদের সেই সব গোপন নায়কদের সম্মান জানিয়েছেন, যাদের ত্যাগেই সমাজ বেঁচে থাকে।

Continue Reading

কবিতার রাজ্য

মানুষের আসল চেহারা – এক বাস্তব কবিতার আয়নায়

Published

on

মানুষের-আসল-চেহারা

” মানুষ”

মিজানুর রহমান

 

সৃষ্টিকর্তার সেরা সৃষ্টি আজব এক জাতি,
সারাক্ষণ ই ব্যস্ত থাকে ছিঁড়তে স্বজনপ্রীতি।
নিজের বেলায় গুণের ভান্ডার, দোষের নাই তো লেষ;
খানিক সুতো খুঁজে পেলেই চড়কি ঘুরায় বেশ।
কেউ বা করে পরোপকার মাথায় রেখে হাত,
কেউ বা আবার পরণিন্দায় থাকে দিবা-রাত।
পরচর্চায় কেউ বা করে নিজের স্বার্থ হাসিল,
কেউ বা আবার দুই পাখি মারে ছুড়ে একটি ঢিল।
স্বার্থান্বেষী হয়ে সবাই মিটায় মনের সাধ,
ভুলে যায় সবাই রক্তের স্রোতে যায় না দেয়া বাঁধ।
এমনি করে যায় পেরিয়ে মাসের পরে বছর,
একটা সময় বাঁধন ছেড়ে হয়ে যায়রে পর।
নিজ খেয়ালে উড়ায় সবাই মনের রঙিন ফানুস,
সৃষ্টিকর্তা সেরা সৃষ্টি’র নাম দিয়েছেন মানুষ..!!!



কবিতার মূলভাব:

সৃষ্টিকর্তার সেরা সৃষ্টি

মানুষ—সৃষ্টিকর্তার সেরা সৃষ্টি। কিন্তু সময়ের সাথে মানুষের চেহারায় যেমন বয়সের ছাপ পড়ে, তেমনি মনের গভীরে লুকিয়ে থাকে এমন কিছু সত্য, যা সব সময় প্রকাশ পায় না।

এই কবিতাটি সেই লুকানো রূপ, মুখোশের আড়ালের মানুষকে তুলে ধরে।


মানুষের ভেতরের দ্বিচারিতা

এই কবিতায় ফুটে উঠেছে মানুষের ভেতরের দ্বিচারিতা, স্বার্থপরতা, এবং সমাজে প্রচলিত পরনিন্দা-পরচর্চার সংস্কৃতি।

কেউ সত্যিই করে পরোপকার, কেউ আবার দিনে-রাতে ব্যস্ত থাকে পরের নিন্দা করে নিজের সুবিধা আদায়ে। এমন সমাজে মানুষ নিজের দোষ ঢেকে রাখে আর অন্যের খুঁত খুঁজতে থাকে।


মানুষের আসল চেহারা

মানুষের ভেতরের রূপ অনেক সময় তার বাহ্যিক আচরণ থেকে ভিন্ন হয়। কেউ সমাজের সামনে ভালো সাজে, আবার পেছনে নানারকম ফন্দি আঁটে।

এই বিষয়টি তরুণ প্রজন্মের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ—কারণ তারা এখনো জীবনের বাস্তবতা ভালোভাবে উপলব্ধি করছে।

মানুষের আসল চেহারা লুকিয়ে থাকে মুখশের আড়ালে,তাই কে ভালো কে মন্দ আমরা স্বচ্ছ হৃদয় দিয়ে বুঝতে পারিনা।

এই কবিতাটি সেই উপলব্ধির এক বাস্তব প্রতিচ্ছবি।


কবিতার পঙ্‌ক্তিমালায় নিহিত বার্তা

  • “নিজের বেলায় গুণের ভান্ডার, দোষের নাই তো লেষ” – মানুষ নিজের ভুল কখনো দেখে না, বরং সবসময় নিজের গুণগান করে।
  • “কেউ বা আবার পরণিন্দায় থাকে দিবা-রাত” – পরচর্চা যেন অনেকের দৈনন্দিন কাজ হয়ে উঠেছে।
  • “ভুলে যায় সবাই রক্তের স্রোতে যায় না দেয়া বাঁধ” – আত্মীয়তার সম্পর্কও আজ ভেঙে যাচ্ছে স্বার্থের সামনে।

উপসংহার

এই কবিতাটি আমাদের চারপাশের মানুষদের নিয়ে চিন্তা করতে শেখায়। স্বার্থের মুখোশের পেছনে লুকিয়ে থাকা “মানুষের আসল চেহারা” বোঝাতে গেলে এ ধরনের সাহিত্যই দরকার।

পাঠকের মনে একবার দাগ কাটতে পারলে, কবিতা হয়ে ওঠে চিরন্তন।

মানুষের আসল চেহারা-লুকিয়ে থাকে খোলসের ভিতর।

Continue Reading
বৃষ্টির-কবিতা-বাংলা-pc
Uncategorized3 weeks ago

“বৃষ্টির কবিতা বাংলা | কদম ফুলের স্মৃতি ও হৃদয়ছোঁয়া পদ্য”

কোরবানির-প্রকৃত-অর্থ-pc
Uncategorized3 weeks ago

“কোরবানির প্রকৃত অর্থ কি? ইসলামে আত্মত্যাগের মহিমা”

আষাঢ়ে-অপেক্ষা-পিক
Uncategorized4 weeks ago

আষাঢ়ে অপেক্ষা কবিতা | বৃষ্টির স্মৃতিতে এক হারানো প্রণয়ের আখ্যান

টক্সিক-রিলেশনশিপ-কবিতা-pc
Uncategorized4 weeks ago

টক্সিক রিলেশনশিপ কবিতা | সম্পর্কের নীরব যন্ত্রণা ও বিচ্ছেদের অনুভূতি

ভালোবাসা-নাকি-স্বার্থপরতা-pic
Uncategorized1 month ago

“ভালোবাসা নাকি স্বার্থপরতা? – আধুনিক সম্পর্কের গভীর বিশ্লেষণ”

ঋতুভিত্তিক-কবিতা-pc
Uncategorized1 month ago

“ঋতুভিত্তিক কবিতা: প্রকৃতির ছন্দে ভালোবাসার ছয়টি পর্ব”

ভাঙনের-শব্দহীনতা-pc
Uncategorized1 month ago

ভাঙনের শব্দহীনতা: একটি অন্তর্বেদনার কবিতা বিশ্লেষণ”

রাজত্ব-কবিতা-pc
Uncategorized1 month ago

“রাজত্ব কবিতা: বিদ্রোহ, ন্যায় ও মানবতার গভীর বিশ্লেষণ”

কটাক্ষের-জবাব-pc
জীবনচক্র1 month ago

“কটাক্ষের জবাব: আমি এক পিস্ আত্মমর্যাদা ও অদম্য মনোবলের পদ্য”

রবের-প্রতি-ভালোবাসা-pc
কবিতার রাজ্য1 month ago

রবের প্রতি ভালোবাসা – ইসলামিক হৃদয়স্পর্শী কবিতা

Title

Trending