Connect with us

সৃজনশীলতা

হৃদয়স্পর্শী বাংলা কবিতা | স্মৃতির অনামিকা ধরে এক প্রেমযাত্রা

Published

on

হৃদয়স্পর্শী-বাংলা-কবিতা-পিক

“স্মৃতির অনামিকা ধরে”

আন্না রহমান



প্রভাতের আলো ফুটে ওঠে—নব আশার বিন্দু দিয়ে,

স্মৃতির অনামিকা ধরে-থমকে গেলাম কৃষ্ণ গহব্বরে

তবু হৃদয়ের অন্তঃস্থলে আঁধার অটল পায়ে হাঁটে।
তুমি নেই—তবু তুমিই আছো,

অলিখিত কবিতার মতো,নীরবতা ভেদ করে বাজে—

তোমারই অচেনা স্বরলিপি।

জীবনের গোধূলি বেলায়, বিষণ্ণ বাতাসে ছুঁয়ে আসে,
তোমার বিস্মৃত অভিসার—ফাগুনের রঙিন রেণু হয়ে।

মৌন সে কথারা, ছায়ার মতো, মনের পথরেখায় আঁকে,
স্মৃতির অনামিকা ধরে—চলতে থাকি একা, নীরবে।

ছায়াপথে চাঁদের আলোয়, বিভোর এক কল্পজাল,
তোমার নামের প্রতিধ্বনি রাত্রির স্তব্ধতাকে ভেদ করে।
স্মৃতির নরম মেঘে আকাশ ঢাকে—

সেই অচেনা বিকেলে,
যেখানে তুমি ছিলে একান্ত, অথচ ধরা দাওনি কোনোদিন।

শুধু হেমন্তের হিমেল হাওয়া—তোমার অভাবকে বহন করে,
আমার একাকিত্বে ফোটে গোপন ফুল—নিবেদনের গন্ধে।
কত কথার অরণ্য, কত ব্যথার ভাষ্য—সবই তো তোমার জন্য,
তবু তুমি অনুপস্থিত, অথচ প্রতিটি পদে বর্তমান।

কবিতার স্তবক জুড়ে, তোমারই অবয়ব গাঁথি—
অরূপ এক প্রেমের ছবি হয়ে তুমি বেঁচে থাকো চিরকাল।
একা চলার পথে তবু তোমার সঙ্গ, অন্তরের প্রহরায়,
ভালোবাসার মৌন ধ্বনি যেন প্রতিধ্বনি তোলে নীরব হৃদয়েতে।

স্মৃতির অনামিকা ধরে—যেন অনন্ত রেলগাড়ি,
তোমারই অপেক্ষায়—কিন্তু গন্তব্য অজানা, অপরিচিত।
নদীর জল যেমন স্মরণ রাখে চাঁদের ছায়া,
তেমনি আমার মন রাখে—তোমার অস্তিত্বের আলোছায়া।

তাই চুপিচুপি লিখে যাই, প্রেমের নামহীন আখ্যান,

যেখানে তুমি, আমি এবং সময়—এক অলৌকিক যাত্রায় বাঁধা।
এই একাকী পথ—তোমার স্মৃতির ধূলায় ধূসর,
তবু প্রিয়, কারণ এ পথেই আমি প্রতিদিন তোমায় খুঁজি।



হৃদয়স্পর্শী বাংলা কবিতা: স্মৃতির অনামিকা ধরে চলা এক একাকী প্রেমযাত্রা


এক প্রেমের নীরব প্রতিচ্ছবি

এটি একটি  একাকী ভালোবাসার যাত্রাপথে লেখা একটি হৃদয়স্পর্শী বাংলা কবিতা।

যেখানে স্মৃতি, প্রেম ও অভাব একসাথে বাঁধা চিরন্তন এক বিষন্নতায়।

এই কবিতার মূলভাব এক নিঃসঙ্গ প্রেমিকের অনুভূতি ও স্মৃতিময়তার সঙ্গে গভীর আত্মিক সংযোগ।

“স্মৃতির অনামিকা ধরে”—এই শব্দবন্ধটি কবিতার আবেগের মূলে।

প্রেমের অনুপস্থিতিতে থাকা এক গভীর উপস্থিতি, এক ধরনের মায়াবী বেদনা, যেখানে একজন মানুষ হারিয়ে গেলেও তার স্মৃতি থেকে যায় চিরকাল।

স্মৃতি অমলিন,স্মৃতি মুছা যায় নাহ,স্মৃতি যদি পেন্সিল হত তবে স্মৃতি জীবন থেকে ইরেজার দিয়ে মুছে ফেলা যেত।

স্মৃতির ছায়ায় বোনা ভালোবাসা

হৃদয়স্পর্শী বাংলা কবিতা কখনো হয়ে ওঠে এক নিঃসঙ্গ হৃদয়ের আত্মপ্রকাশ।

কবিতার প্রতিটি পঙ্‌ক্তি যেন স্পর্শ করে হৃদয়ের সেই গভীর জায়গাগুলো, যেখানে জমে থাকে না বলা অনুভূতি।

এই কবিতায় কবি প্রেমের না বলা কথা, হারিয়ে যাওয়া একজনের স্মৃতি এবং একাকীত্বের ব্যথাকে নিঃশব্দে ছুঁয়ে গেছেন।

প্রভাত থেকে গোধূলি: আলো ও অন্ধকারের সহাবস্থান

প্রভাতের আলো দিয়ে কবিতা শুরু হলেও, তাতে লুকিয়ে থাকে কৃষ্ণ গহ্বরের গভীরতা।

কবি যেন বলতে চান—আলো যতই উজ্জ্বল হোক, স্মৃতির এক একটি কোণ থাকে যেখানে কেবল অন্ধকারই বাস করে।

সেই অন্ধকারের মধ্যেও স্মৃতির হাত ধরে এগিয়ে চলে মন।

তুমি নেই—তবু আছো: নীরব প্রেমের অভিব্যক্তি

এই কবিতায় এক গভীর অনুভবের কথা বলা হয়েছে—যেখানে প্রিয় মানুষটি অনুপস্থিত, কিন্তু অনুভবে, নীরবতায়, শব্দহীন স্বরে তিনি রয়েছেন সর্বত্র।

প্রেম এখানে উচ্চারিত নয়, তবু প্রতিটি স্তবকেই তার উপস্থিতি।

স্মৃতির অনামিকা: যেখানে বেদনার নাম লেখা থাকে

স্মৃতির অনামিকা—এ এক অদ্ভুত উপমা। কবি এখানে স্মৃতিকে আঙুলের আকারে চিহ্নিত করেছেন, যেন তা দিয়ে লেখা থাকে সম্পর্কের না বলা কাহিনি।

প্রত্যেকটা ছায়া, বাতাসের হিমেল পরশ—সবই যেন প্রেমিকের অভাব ঘিরে।

নীরবতার কাব্য: ছায়ার মতো ভালোবাসা

এই হৃদয়স্পর্শী বাংলা কবিতা এমন এক প্রেমের ছবি আঁকে, যেখানে প্রেমকে ছোঁয়া যায় না, কিন্তু ফেলা যায় না মন থেকেও।

কবি তার অনুভূতিকে ছায়ার মতো ছড়িয়ে দিয়েছেন কল্পনার পথে। রাতের স্তব্ধতা ভেদ করে ভেসে আসে সেই নাম—যা বলা যায় না, তবু ভোলা যায় না।

হেমন্তের বাতাসে প্রেমের চিহ্ন

হেমন্তের হাওয়া এখানে শুধু ঋতুর প্রতীক নয়, এটি হয়ে উঠেছে অভাবের বাহক।

কবি জানিয়ে দিয়েছেন—প্রিয় মানুষটি চলে গিয়েছেন, কিন্তু বাতাসে আজও রয়ে গেছে তার সুবাস। সেই সুবাসই মাঝে মাঝে মনকে আন্দোলিত করে তোলে।

নামহীন আখ্যান: যেখানে আমি, তুমি আর সময়

কবির লেখা এক নামহীন প্রেমকথা—যেখানে নেই কোনো প্রত্যাশা, নেই কোনো দাবি। শুধু এক অলৌকিক যাত্রা, যেখানে সময় হয়ে ওঠে প্রেমের সঙ্গী।

এই যাত্রার গন্তব্য অজানা, তবু তাতে রয়েছে গভীর ভালোবাসার ছাপ।

নদীর জলে প্রেমের ছায়া

নদীর জলে যেমন চাঁদের প্রতিবিম্ব থেকে যায়, তেমনি হৃদয়ে থেকেও যায় সেই মানুষটি, যার অস্তিত্ব অনুভব করা যায়, কিন্তু ধরা যায় না।

কবি এই প্রতীক ব্যবহার করে গভীর প্রেমের অনুভবকে আরও বেশি নিখুঁত করে তুলেছেন।


উপসংহার: হৃদয়স্পর্শী বাংলা কবিতা, এক অনন্ত পথচলার নাম

এই হৃদয়স্পর্শী বাংলা কবিতা আমাদের শিখিয়ে দেয়—প্রেমের অনুপস্থিতিও একরকম উপস্থিতি।

না বলা কথাও কখনো কখনো সবচেয়ে বেশি বলা হয়ে যায়। স্মৃতি আমাদের কাছে শুধু অতীত নয়, বরং বর্তমানেরই এক অবিচ্ছেদ্য অংশ।

এই কবিতার প্রতিটি লাইন যেন আমাদের অনুভূতির এক নতুন দরজা খুলে দেয়—যেখানে প্রেম, বিরহ, একাকীত্ব আর আশার এক অপূর্ব মিশেল ঘটে।

সৃজনশীলতা

স্বার্থান্বেষী মানুষ: সমাজের মুখোশ খুলে দেওয়া বাস্তব জীবনের চিত্র

Published

on

স্বার্থান্বেষী-মানুষ-pic

” মানুষ”

মিজানুর রহমান 

সৃষ্টিকর্তার সেরা সৃষ্টি আজব এক জাতি,
সারাক্ষণ ই ব্যস্ত থাকে ছিঁড়তে স্বজনপ্রীতি।
নিজের বেলায় গুণের ভান্ডার, দোষের নাই তো লেষ;
খানিক সুতো খুঁজে পেলেই চড়কি ঘুরায় বেশ।
কেউ বা করে পরোপকার মাথায় রেখে হাত,
কেউ বা আবার পরণিন্দায় থাকে দিবা-রাত।
পরচর্চায় কেউ বা করে নিজের স্বার্থ হাসিল,
কেউ বা আবার দুই পাখি মারে ছুড়ে একটি ঢিল।
স্বার্থান্বেষী হয়ে সবাই মিটায় মনের সাধ,
ভুলে যায় সবাই রক্তের স্রোতে যায় না দেয়া বাঁধ।
এমনি করে যায় পেরিয়ে মাসের পরে বছর,
একটা সময় বাঁধন ছেড়ে হয়ে যায়রে পর।
নিজ খেয়ালে উড়ায় সবাই মনের রঙিন ফানুস,
সৃষ্টিকর্তা সেরা সৃষ্টি’র নাম দিয়েছেন মানুষ..!!!


স্বার্থান্বেষী মানুষ কবিতা: এক নির্মম বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি


কবিতার পরিচিতি

“মানুষ” শিরোনামে লেখা এই কবিতাটি বাস্তব জীবনের প্রতিচ্ছবি।

এখানে মানুষ নামক শ্রেষ্ঠ সৃষ্টির অন্তর্নিহিত দ্বন্দ্ব, আত্মস্বার্থপরতা এবং সমাজের বাস্তব চিত্র ফুটে উঠেছে।

মানুষ কীভাবে স্বজনপ্রীতি, পরনিন্দা ও স্বার্থের জালে আটকে পড়ে—এই কবিতায় তা অনুপম ছন্দে তুলে ধরা হয়েছে।


মূল ভাবনা: স্বার্থের জালে বন্দি মানুষ

স্বার্থান্বেষী মানুষ কবিতা আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়, আমরা কীভাবে নিজেদের স্বার্থকে বড় করে দেখি।

কারো ভালো করতে গিয়ে যদি নিজে ক্ষতির মুখে পড়তে হয়, তাহলে সেই ভালোবাসা আর থাকে না।

এই আত্মকেন্দ্রিকতা ধীরে ধীরে আমাদের মানবিকতা নষ্ট করে দিচ্ছে।


স্বজনপ্রীতির বৃত্তে মানুষ

“সারাক্ষণই ব্যস্ত থাকে ছিঁড়তে স্বজনপ্রীতি।”

এই পংক্তি বুঝিয়ে দেয়, মানুষ নিজের স্বজন বা পরিবারের কাছেও স্বার্থ খোঁজে।

আত্মীয়তার সম্পর্কে যেখানে ভালোবাসা থাকার কথা, সেখানে চলছে নিজের লাভের হিসাব।

সমাজের মূলে থাকা বিশ্বাস ধীরে ধীরে ক্ষয়ে যাচ্ছে এই মানসিকতার কারণে।


গুণের ঢাক, দোষের কাঁধে বোঝা

“নিজের বেলায় গুণের ভাণ্ডার, দোষের নাই তো লেষ।”

এখানে কবি ইঙ্গিত দিয়েছেন এক নির্মম বাস্তবতার দিকে।

আমরা নিজের ভুল স্বীকার করি না, অথচ অন্যের সামান্য ভুলকে বড় করে দেখি। introspection বা আত্মসমালোচনার অভাব আমাদের স্বার্থপর করে তোলে।


পরচর্চা ও পরনিন্দার বিষাক্ততা

“পরচর্চায় কেউ বা করে নিজের স্বার্থ হাসিল।”

সমাজে এমন মানুষ আছে যারা অন্যের দুর্বলতা খুঁটে নিজের লাভের পথ খোঁজে।

পরনিন্দা শুধু একজনকে ছোট করে না, এটি সম্পর্কের মধ্যে বিষ ঢেলে দেয়।

এই স্বভাব এক বিষাক্ত পরিবেশ তৈরি করে, যা সমাজে দূরত্ব তৈরি করে।


সমাজের দ্বিমুখী চিত্র

স্বার্থান্বেষী মানুষ’কে দুটি ভাগে ভাগ করেছে:

  1. নিঃস্বার্থ মানুষ – যারা ভালো কাজ করে চুপচাপ।
  2. স্বার্থপর মানুষ – যারা সব সময় নিজের লাভ খোঁজে।

এই দ্বিমুখী বাস্তবতা সমাজের প্রতিদিনের ঘটনা। ভালো মানুষও কখনও কখনও স্বার্থপরদের চাপে থেমে যেতে বাধ্য হয়।


স্বার্থান্বেষী মানুষ:সময়ের সাথে সম্পর্কের পরিবর্তন

“এমনি করে যায় পেরিয়ে মাসের পরে বছর, একটা সময় বাঁধন ছেড়ে হয়ে যায়রে পর।”

এই পংক্তিতে কবি সময়ের সাথে সম্পর্কের অবক্ষয়কে তুলে ধরেছেন। এক সময় যেসব সম্পর্ক খুব ঘনিষ্ঠ ছিল, স্বার্থ ফুরালে সেগুলো একেবারে অচেনা হয়ে যায়। এই বাস্তবতা সবাইকেই একবার না একবার অনুভব করতে হয়।


রঙিন ফানুসের মতো মানুষ

“নিজ খেয়ালে উড়ায় সবাই মনের রঙিন ফানুস।”

এই লাইনটি মানুষের স্বপ্ন ও কল্পনার জগৎকে বোঝায়। মানুষ নিজের ইচ্ছা আর স্বপ্নের পেছনে ছুটতে ছুটতে মানবিক মূল্যবোধ হারিয়ে ফেলে। ফলে একে অপরের উপর নির্ভরতা ও আস্থা কমে যায়।


সৃষ্টির সেরা জীব

মানুষ সৃষ্টিকর্তার শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি হলেও, বর্তমান সমাজে স্বার্থান্বেষী মানুষদের আধিপত্য স্পষ্টভাবে পরিলক্ষিত হয়

মানব আশরাফুল মাখলুকাত।কিন্তু বর্তমান সমাজে মানুষে মানুষে এতো কোলাহল যা দেখে মনে হয় না মানুষ সৃষ্টি সেরা।

মানব কারো ভালো দেখতে পারে না,সামনা সামনি ভালো সাজার অভিনয় করলেও পিছনে বসে কিভাবে অন্যের খারাপ করবে সেই চিন্তায় মগ্ন থাকে।

কখনো যদি কারো উপকার কর তারপর যদি কোন একটা কারণে ক্ষতি হয়ে বসে তখন পিছনের সব কথা ভুলে তোমাকে দোষারোপ করবে।এইটাই হল সৃষ্টির সেরা জীবের বৈশিষ্ট্য।

কবিতায় চিত্রায়িত হয়েছে এমন এক জাতির কথা, যারা নিজের স্বার্থ চরিতার্থ করতে গিয়ে সম্পর্কের বাঁধন ছিঁড়ে দেয়।

তারা কখনো স্বজনপ্রীতির নামে, কখনো আবার পরনিন্দা কিংবা কুৎসা রটনার মাধ্যমে সমাজকে বিভ্রান্ত করে।


উপসংহার

স্বার্থান্বেষী মানুষ কবিতা একটি সামাজিক দিকনির্দেশনা। এখানে মানুষ নামক জীবটির দ্বৈততা, ভণ্ডামি, এবং আত্মমুখীনতা তুলে ধরা হয়েছে।

এই কবিতা আমাদের শেখায়, যদি আমরা নিজেদের ভুল বুঝে পরিবর্তন করতে পারি, তবেই সত্যিকারের মানুষ হওয়া সম্ভব।

এটি এক বাস্তব আয়না, যেখানে সমাজের চেহারা স্পষ্টভাবে ধরা পড়ে। কবি বোঝাতে চেয়েছেন, সম্পর্ক ক্ষণস্থায়ী হতে পারে কিন্তু মানবিক মূল্যবোধ চিরস্থায়ী হওয়া উচিত। আত্মসমালোচনা ও সচেতনতা এই কবিতার মূল বার্তা।


পাঠকের জন্য বার্তা

এই কবিতা আমাদের আত্মসমালোচনার সুযোগ করে দেয়। আমরা যদি সত্যিকার অর্থে মানুষ হতে চাই, তবে আমাদের স্বার্থপরতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। মানবিক গুণাবলিই একজন মানুষকে প্রকৃত মানুষ করে তোলে। ভালোবাসা, সহানুভূতি ও নিরপেক্ষতা থাকলেই সমাজ সুন্দর হয়।

Continue Reading

সৃজনশীলতা

ভালোবাসার বিচ্ছেদ | বিচ্ছেদের বুকে জমে থাকা ভালোবাসা

Published

on

ভালোবাসার-বিচ্ছেদ-pic

বিদায়ের আলোছায়া

তামান্না রহমান

(ভালোবাসার বিচ্ছেদ)

আছো কেমন?
দিব্যি ভালো!
নতুন করে স্বপ্ন দেখ?
দেখার মতো নেই যে আলো!
তোমার আলো কোথায় হারালো?
অন্ধ করে যে পালালো।

আমায় কেনো ভুল বুঝলে?
তুমি কি নিভুল ছিলে?
ভুলত আমার অল্প ছিল!
হুম..মিথ্যা প্রেমের গল্প ছিল।
বাসতাম তোমায় সত্যি ভালো!
তাই বুঝি ফেলে পালালে?

বেকার মানুষ তাই তো তখন;
আর থাক বলতে হবে না এখন।
সত্যি তোমায় বেসেছিলাম ভালো
বেকার বলে ছাড়তে হল?

আমি ছিলাম নিরূপায়!
ছেড়ে দিয়ে পেয়েছ তো উপায়?
সে সব কথা থাকনা পড়ে;
হুম..ধূলোপড়া পুরনো চ্যাপ্টারে।
সংসার জীবন কেমন চলে?

তুমি যেমন চেয়েছিলে।
বড্ড পরিবর্তন তোমার মাঝে;
তোমার জীবন কেমন চলে?
আছি ভালো সব মিলিয়ে!
সেটাই তো থাকার কথা।
হা হা ভালো থাকি চাওনা বুঝি?
চাওয়ার মতো কি বা বুঝি?
অনেক কিছু বুঝতে তখন।
সেই তখনটা নেই তো এখন।

আমার কথা মনে পড়ে?
আচ্ছা আমি এখন আসি!
সংসার নিয়ে ব্যস্ত বুঝি?
এসব শুনার কি প্রয়োজন?
আচ্ছা তুমি থাকো ভালো।
বিদায় বেলায়ও বলে ছিলে।
চাই তো ভিষণ ভালো থাকো!
তাই তো আজ এমন হলো।
নিজের প্রতি খেয়াল রেখো!

মেয়ের স্কুল ছুটি হল।
তাহলে এখন যাচ্ছো চলে।
আজীবনের জন্য তো ছেড়ে ছিলে।।
ছাড়তে চাইনি তখন আমি!
মিথ্যা আজও বলছ তুমি।
পারলে আমায় ক্ষমা করো!
বিধাতার কাছে চেয়ে নিও।।।



কবিতার মূলভাব:ভালোবাসার স্মৃতি ও বিচ্ছেদ এর কবিতা

১. ভালোবাসার স্মৃতি ও বিচ্ছেদ

ভালোবাসার স্মৃতি ও বিচ্ছেদ জীবনের এক চিরন্তন গল্প। কিছু ভালোবাসা রয়ে যায় শুধু হৃদয়ের কোণে। কিছু সম্পর্ক মুছে গেলেও তার ছায়া পড়ে থাকে মনে। এই কবিতায় সেই হারানো ভালোবাসা ও তার ভাঙনের যন্ত্রণা উঠে এসেছে এক নিঃশব্দ কথোপকথনের মাধ্যমে।

২. অর্থনৈতিক বাস্তবতা ও হারিয়ে যাওয়া সম্পর্ক

প্রেমিক বলে—সে সত্যিই ভালোবাসত, কিন্তু বেকারত্বের কারণে সে সম্পর্ক ধরে রাখতে পারেনি। সম্পর্কের মাঝে তখন দারিদ্র‍্য ছিল, সঙ্গী ছিল না স্থিরতা। প্রিয়জন তাকে ছেড়ে চলে যায়, আর সেই ক্ষত রয়ে যায় চিরকাল।

৩. অতীত ভালোবাসার স্মৃতি আর বর্তমান জীবনের ব্যবধান

প্রেমিকা এখন সংসার নিয়ে ব্যস্ত। তার জীবনে এসেছে পরিবর্তন। কথক দেখে—তাকে ছাড়া সবকিছু চলেছে ঠিকঠাক। অথচ তার নিজের মধ্যে রয়ে গেছে অতীতের ছায়া, পুরনো স্মৃতির ধুলো পড়া পাতাগুলো।

৪. বিদায় ও ক্ষমার বার্তা এবং ভালোবাসার বিচ্ছেদ

শেষে কবিতার কথক একটি নরম বিদায়ের সুরে কথা বলে। সে জানায়, সে ভুল বোঝেনি, বরং আজও ভালোবাসে। ক্ষমা চায়—যদি কোনোদিন কষ্ট দিয়ে থাকে। বিদায় জানিয়ে বলে, “নিজের প্রতি খেয়াল রেখো”, ঠিক যেমন ভালোবাসার শেষ ইচ্ছা হয়।আজীবনের জন্য দুটি মানুষ আলাদা আলাদা পথ বেঁকে গেল।শুধু হৃদয়ে রয়ে গেল ভালোবাসার স্মৃতি ও বিচ্ছেদ এর যন্ত্রণা।


শেষ কথা

ভালোবাসার স্মৃতি কখনও পুরনো হয় না,তা সময়ের গহীনে স্নিগ্ধ আলোর মতো জ্বলতে থাকে।সেই মধুর মুহূর্তগুলিই হয়ে ওঠে একাকীত্বের অবলম্বন,যখন বিচ্ছেদের ব্যথা চেপে বসে বুকের গভীরে।

ভালোবাসা হারিয়ে গেলেও তার ছায়া রয়ে যায় হৃদয়ের আঙিনায়,প্রতিটি নিশ্বাসে, প্রতিটি নির্জনতায়।
বিচ্ছেদ আমাদের কাঁদায়, ভেঙে দেয়, কিন্তু শেখায় —
ভালোবাসা কখনো মুছে যায় না, বদলে যায় শুধু তার রূপ।
শেষ পর্যন্ত, স্মৃতিই হয়ে থাকে ভালোবাসার সবচেয়ে সুন্দর আশ্রয়।

Continue Reading

সৃজনশীলতা

বাঙালির বৈশাখ: প্রাণের উৎসব ও সংস্কৃতির রঙে রাঙানো ঋতু

Published

on

বাঙালির-বৈশাখ

বৈশাখের আগুন

মিজানুর রহমান

বৈশাখ, তুমি ঝড়ের হাওয়া, আগুনের ফুলকি,
মাটির বুকে জাগিয়ে দাও জীবনের ধুকপুকি।
শিমুল-পলাশ রাঙা হয়ে ফোটে তোমার ডাকে,
গ্রামের পথে হিল্লোলে মাতে নতুন সুরের বাঁকে।
হাওরে দোলে নৌকার মাঝি, গায় বাউলের গান,
বৈশাখ, তুমি বাঙালির বুকে, নতুন প্রাণের প্রাণ।
মঙ্গল শোভায় মেতে ওঠে গাঁয়ের হাটবাজার,
মেলার ধুলোয় মিশে যায় হাসি, নাচে রঙিন ষাড়।
হালখাতার পাতায় লেখা নতুন দিনের হিসাব,
বৈশাখ, তুমি জাগাও মনে অপার সম্ভাব।
গ্রীষ্মের তাপে পুড়লেও মন, তুমি দাও ছায়ার সুখ,
কৃষকের ঘামে, কবির কলমে, জন্ম নেয় নতুন রুপ।
বৈশাখ তুমি চির জাগ্রত, তুমি প্রাণের ঢেউ,
বাঙালির রক্তে বয়ে চলো তুমি, বাঁধা দিবে না কেউ।
এসো তবে, নতুন বছরে আলোর ডাক নিয়ে,
বৈশাখ, তুমি ছড়িয়ে দাও প্রেম, শান্তির পরশ দিয়ে।
তোমার রোদে, তোমার ছায়ায়, ফুটুক ফুলের হাসি,
বাংলার মাটি, বাংলার মানুষ, থাকুক চির উচ্ছ্বাসী।


কবিতার মূলভাবঃ 


ভূমিকা: বৈশাখের আবাহন

বৈশাখ বাঙালির জীবনে এক নতুন সূর্যোদয়ের নাম। এই কবিতায় বৈশাখকে প্রাণের প্রতীক হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে।

ঝড়, আগুন, ফুলকি, আর নতুন আশার বার্তায় বৈশাখ বাঙালির মনে সৃষ্টি করে প্রাণচাঞ্চল্য।


প্রকৃতির রূপে বৈশাখ

শিমুল-পলাশের রাঙা রঙে ফুটে ওঠে বৈশাখের রূপ। গ্রামের পথে হাওয়ার ঝাপটায় সুরের ঢেউ নামে।

বৈশাখ যেন প্রকৃতির ক্যানভাসে এক অদ্ভুত রঙের ছোঁয়া দেয়। বাউল গানের সুরে, নৌকার দোলায় বাঙালি ফিরে পায় তার শিকড়ের টান।


মেলা ও উৎসবের প্রাণবন্ততা

বৈশাখ মানেই উৎসব। গাঁয়ের হাটবাজারে মঙ্গল শোভাযাত্রা আর ষাঁড় নাচে আনন্দের জোয়ার বইয়ে দেয়।

মেলামেশায় মিলিয়ে যায় শহর-গ্রামের ভেদাভেদ। মানুষের মুখে হাসি, পায়ে নাচ। বৈশাখ আসে শান্তি আর আনন্দের আহ্বান নিয়ে।


নতুন বছরের নতুন সূচনা

হালখাতা খুলে নতুন দিনের হিসাব শুরু হয় বৈশাখে। পুরনো ভুল আর ক্লান্তিকে সরিয়ে জীবন পায় নতুন দিশা। বৈশাখ বাঙালির মনে সম্ভাবনার আলো জ্বেলে দেয়।


কৃষক ও কবির চোখে বৈশাখ

প্রচণ্ড গ্রীষ্মেও বৈশাখ দেয় ছায়ার স্বস্তি। কৃষকের ঘামে জন্ম নেয় সোনালী ফসল। কবির কলমে উঠে আসে নবজাগরণের ভাষা। বৈশাখ শুধু ঋতু নয়, বৈশাখ হলো সৃষ্টির স্পন্দন।


বাঙালির চেতনায় বৈশাখ

বৈশাখ বাঙালির রক্তে গাঁথা। সে চির জাগ্রত, চির নবীন। তাকে কেউ রুখে রাখতে পারে না। সে আসে বারবার, ভালোবাসা আর শান্তির বার্তা নিয়ে।


উপসংহার: বৈশাখ মানেই ভালোবাসা

শেষে কবি আহ্বান করেন, বৈশাখ যেন ছড়িয়ে দেয় প্রেম ও শান্তির পরশ। তার রোদে ফুটুক নতুন সম্ভাবনার ফুল। বাংলার মাটি আর মানুষ থাকুক চির উচ্ছ্বাসী, বৈশাখের মতোই নবীন ও চিরসবুজ।

Continue Reading
বৃষ্টির-কবিতা-বাংলা-pc
Uncategorized3 weeks ago

“বৃষ্টির কবিতা বাংলা | কদম ফুলের স্মৃতি ও হৃদয়ছোঁয়া পদ্য”

কোরবানির-প্রকৃত-অর্থ-pc
Uncategorized3 weeks ago

“কোরবানির প্রকৃত অর্থ কি? ইসলামে আত্মত্যাগের মহিমা”

আষাঢ়ে-অপেক্ষা-পিক
Uncategorized4 weeks ago

আষাঢ়ে অপেক্ষা কবিতা | বৃষ্টির স্মৃতিতে এক হারানো প্রণয়ের আখ্যান

টক্সিক-রিলেশনশিপ-কবিতা-pc
Uncategorized1 month ago

টক্সিক রিলেশনশিপ কবিতা | সম্পর্কের নীরব যন্ত্রণা ও বিচ্ছেদের অনুভূতি

ভালোবাসা-নাকি-স্বার্থপরতা-pic
Uncategorized1 month ago

“ভালোবাসা নাকি স্বার্থপরতা? – আধুনিক সম্পর্কের গভীর বিশ্লেষণ”

ঋতুভিত্তিক-কবিতা-pc
Uncategorized1 month ago

“ঋতুভিত্তিক কবিতা: প্রকৃতির ছন্দে ভালোবাসার ছয়টি পর্ব”

ভাঙনের-শব্দহীনতা-pc
Uncategorized1 month ago

ভাঙনের শব্দহীনতা: একটি অন্তর্বেদনার কবিতা বিশ্লেষণ”

রাজত্ব-কবিতা-pc
Uncategorized1 month ago

“রাজত্ব কবিতা: বিদ্রোহ, ন্যায় ও মানবতার গভীর বিশ্লেষণ”

কটাক্ষের-জবাব-pc
জীবনচক্র1 month ago

“কটাক্ষের জবাব: আমি এক পিস্ আত্মমর্যাদা ও অদম্য মনোবলের পদ্য”

রবের-প্রতি-ভালোবাসা-pc
কবিতার রাজ্য1 month ago

রবের প্রতি ভালোবাসা – ইসলামিক হৃদয়স্পর্শী কবিতা

Title

Trending